বাজেট অধিবেশনের শুরুতে বাংলায় বক্তৃতা পাঠ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু তাঁর বক্তৃতায় আরজি করের প্রসঙ্গ ছিল না। যা নিয়ে বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। রাজ্যপালের ভাষণ চলাকালীনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে ফেলার অভিযোগে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার রাজ্য সরকারের দেওয়া ভাষণ পাঠ করে বিধানসভার অধিবেশন ছেড়েছেন রাজ্যপাল।
সোমবার থেকে রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের দেওয়া ভাষণ পাঠ করে অধিবেশনের সূচনা করেন রাজ্যপাল। সেই অনুযায়ী রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ১১ পাতার বক্তৃতা। সোমবার বাংলায় সেই বক্তৃতা পাঠ করেন রাজ্যপাল বোস। তাঁর ভাষণের আগে বিধানসভায় রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া হয়। জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে ভাষণ শেষ করেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন:
বিজেপির অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে রাজ্যপালের বক্তৃতায়। ওই প্রকল্পকে ‘জলস্বপ্ন’ বলে দেখানো হয়েছে। রাজ্যপাল ভাষণের সেই অংশ পাঠ করতেই প্রতিবাদ করে ওঠেন শুভেন্দু। ভাষণের মাঝেই তিনি জানান, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রকল্পের নাম বদলে দিয়েছে। এর আগেও তারা এই কাজ করেছিল, দাবি শুভেন্দুর। তিনি জানান, এর আগে প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে কথা উঠলে কেন্দ্রের কাছে ভুল স্বীকার করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই সময়ে জল প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা বরাদ্দ করে দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপালের ভাষণে আবার একই কাজ করায় কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকে অভিযোগ জানাবেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআর পাটিলকে ইমেলও করেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, প্রকল্পের নাম সংশোধন না-করলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হোক।
ভাষণ শেষে রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, চন্দনা বাউড়ি, তাপসী মণ্ডল এবং সুমিতা সিংহ। কেন আরজি করের প্রসঙ্গ রাজ্যপালের বক্তৃতায় উল্লেখ পর্যন্ত করা হল না, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এর আগে বিরোধী দলনেতা দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী ভাষণ পাঠ করবেন না বলে রাজ্যের পাঠানো বক্তৃতা ফেরত পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। পরে তা সংশোধন করলে ভাষণ পাঠে তিনি রাজি হয়েছেন। তবে রাজভবনের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। রাজভবন জানায়, বিতর্কিত কোনও বিষয়ে তারা মন্তব্যই করবে না। রাজ্য সরকার যে ভাষণ পাঠিয়েছে, রাজ্যপাল সেটাই পাঠ করেছেন। সোমবার তাঁর ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ‘কঠোর’ মন্তব্য ছিল না বটে। তবে কেন্দ্রের টাকা যে বাংলা পাচ্ছে না, তার উল্লেখ রাজ্যপালের ভাষণে রয়েছে।