Advertisement
E-Paper

স্লগে ভিড় জমছে না

চেঁচামেচি, ভিড়, হইহল্লা সবই আগের মতোই। কিন্তু বিক্রিতে ভাটা পড়েছে অনেকটাই। কেউ বলছেন নোট বাতিলের ধাক্কাটা পুরোপুরি সামলে উঠতে পারেনি বাজার। কারও মতে আমজনতার হাতে তেমন টাকাই নেই। তবে ফুটপাথের ডাক অগ্রাহ্য করে উল্টো ফুটের ঝাঁ চকচকে বাতানুকূল শপিং মলের দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। সেই সেলের বাজারে উঁকি দিল আনন্দবাজার।ফুটপাথের ডাক অগ্রাহ্য করে উল্টো ফুটের ঝাঁ চকচকে বাতানুকূল শপিং মলের দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। সেই সেলের বাজারে উঁকি দিল আনন্দবাজার।

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২২
চৈত্র সেল। তাই রাস্তাও বন্ধ। দোকানের সামনে ভিড় বালুরঘাটে। বৃহস্পতিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত।

চৈত্র সেল। তাই রাস্তাও বন্ধ। দোকানের সামনে ভিড় বালুরঘাটে। বৃহস্পতিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত।

জলপাইগুড়ি

টেম্পল স্ট্রিটে ফুটপাতে জামা-কাপড়ের দোকান শম্ভু রায়ের৷ তিনি জানাচ্ছেন, নোট বাতিলের পর থেকেই কেনাবেচা কমেছে। চৈত্র সেলের বাজারেও তা বাড়েনি। তাঁর মতে, যাঁদের হাতে টাকা-পয়সা রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই মলে ছুটছেন৷ ওই এলাকার একটি পোশাকের দোকানের কর্মী রণজিৎ নন্দী জানান, গত বছর চৈত্র সেলেও ভাল জামা-কাপড় বিক্রি হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘এক বছরে শহরের বুকে অনেকগুলি মল গড়ে উঠেছে৷ তাই বিক্রি একটু কম৷’’ ডিবিসি রোডের একটি মলের স্টোর ম্যানেজার পিন্টু মজুমদার বলেন, ‘‘প্রচুর মানুষ আসছেন৷ তবে জামা-কাপড় দেখেই ফিরে যাচ্ছেন৷ কিনছেন না৷’’

শিলিগুড়ি

ব্যস্ততা: চলছে চৈত্র সেল। তাই রাস্তার ধারে দোকানের সামনে ভিড় শিলিগুড়িতে। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শিলিগুড়িতে যা চৈত্র সেল তাই-ই সিজন ডিসকাউন্ট। কারও পোস্টারে ‘সামার ডিসকাউন্ট’। এক তলা থেকে পাঁচ তলায় শপিং মলের পরিচিত সাহেবিয়ানা এক ধাক্কায় উধাও। একটি নামী ব্রান্ডের বিপণির ইংরেজি পোস্টারের এক দিকে বাংলা হরফে লেখা ‘চৈত্র সেল’। বিপণির কর্মী শৈবাল ঘোষ জানালেন, প্রতি বছরই এই সময়ে তাঁদের সংস্থা ছাড় দেয়। তবে এ বার বদল এসেছে মোড়কে। দেশের অন্য প্রান্তে পোস্টারে লেখা সিজন ডিসকাউন্ট। কিন্তু শিলিগুড়ির জন্য আসা পোস্টারে চৈত্র সেল। শৈবালবাবু বললেন, ‘‘আমরাই এমন বদলের অনুরোধ করেছিলাম। তার ফলও মিলছে। চৈত্র সেল দেখলেই বাঙালি ঝাপিয়ে পড়ে।’’ শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি মলের প্রবেশদ্বারেই বসেছে পেল্লায় মঙ্গলঘট। স্বস্তিকা চিহ্ন, হালখাতার ছবি দিয়ে সাজসজ্জা। দোকানের কাচে সিঁদুর দিয়ে নকশা কাটা। বিভিন্ন নামি ব্র্যান্ডও দোকান জুড়ে সামার ডিসকাউন্টের পোস্টার লাগিয়েছে। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড় চলছে। নামজাদা ব্যাগের দোকানেও ২০ শতাংশ ছাড়ের আহ্বান। একটি সংস্থা আবার একটির সঙ্গে আরেকটি টি শার্ট উপহারের কথা জানিয়ে পোস্টারে ছয়লাপ করে দিয়েছে। মলে ছবি প্রদর্শনী ও বিক্রি চলছে।

রায়গঞ্জ

লাইনবাজার, নিউ মার্কেট, সুদর্শনপুর, মোহনবাটী, বিদ্রোহী মোড় এলাকার বিভিন্ন পোশাকের দোকানের সামনে অস্থায়ী শিবির। কেউ ২০ শতাংশ দিলে পাশের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন। কেউ আবার এক লপ্তে ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে হাঁক দিচ্ছেন। রেল কলোনি, সুভাষগঞ্জ ও মোহনবাটী এলাকাতেও রাস্তার ধারে বসে বিক্রি চলছে। শপিং মলই বা পিছিয়ে থাকে কেন! রায়গঞ্জের দেহশ্রী মোড়, নিশীথ সরণি ও শিলিগুড়িমোড় এলাকায় একাধিক শপিং মলেও পোশাকের দামে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ ছাড়ে সেল দেওয়া হচ্ছে। নিউ মার্কেট এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী রঞ্জন ঘোষের দাবি, এ বছর চাষিরা আলুর দাম না পাওয়ায় গোড়ায় সেলের বাজারে ভিড় ছিল না। এক সপ্তাহ আগে থেকে সেল জমে।

মালদহ

শপিং মলে ছাড়ের বন্যা বইছে যেন! গড়ে ৫০ শতাংশ ছাড় মিলছে অনেক দোকানেই। কিন্তু, তাপমাত্রার পারদ চড়েছে ৩৮ ডিগ্রি। ফলে দুপুরের দিকে দোকান গুলি ফাঁকা থাকছে। সন্ধের পর দোকানগুলিতে তিল ধরানোর জায়গা থাকে না মানুষের ভিড়ে। ফুটপাত ব্যবসায়ী সুকুমার সাহা বলেন, ‘‘বড় দোকানগুলি ছাড় দেওয়ায় আমাদেরও ছাড় দিতে হচ্ছে। ছাড় দেওয়ায় বেশি লাভ হচ্ছে না।’’

কোচবিহার

‘স্লগ’ ওভারে ক্রেতাদের ভিড় খানিকটা বাড়লেও চৈত্র সেলের সামগ্রিক ব্যবসায় খুশি নন কোচবিহারের ব্যবসায়ীরা। কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুণ্ডু বলেন, “শেষের কয়েক দিন ভিড় হলেও, ব্যবসা তেমন জমেনি। গতবারের চেয়ে ব্যবসা অন্তত ৩০ শতাংশ কম হবে বলেই অনুমান।”

আলিপুরদুয়ার

জামাকাপড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিকোচ্ছে মিষ্টিও। বরাত মিলছে দেদার। পয়লা বৈশাখের পুজোর জন্য কেউ ২ হাজার লাড্ডুর বরাত দিয়েছেন। কোথাও ৩ হাজার রসগোল্লা। বেলতলা মোড়ের মিষ্টি বিক্রেতা জয়দেব ঘোষ জানান, নববর্ষের দিন মিষ্টির চহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এই দিনে চাহিদা থাকে মূলত রসগোল্লা, গোলাবজামুন, পান্তুয়া ও ল্যাংচার। শুধু এই প্রথাগত মিষ্টিগুলির জন্য লম্বা লাইন পড়ে যায়। ভাল ছাড় থাকায় গ্রাম থেকেও ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন শহরে।

Chaitra Sale Shoppers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy