Advertisement
E-Paper

ভাই কি বেঁচে আছে, অপেক্ষায় বসে দিদি

এখনও কত জন নিখোঁজ, সেই তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও। পুলিশের দাবি, নিখোঁজ দু'জনের খবর মিলেছে। দু’জনই ঝাড়খণ্ডেরই বাসিন্দা।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৫
প্রতীক্ষায়: মন্টুর পরিবার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

প্রতীক্ষায়: মন্টুর পরিবার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার সকাল। গঙ্গা পাড়ে থিকথিকে ভিড়। সেই ভিড়ের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা নিয়ে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান পেতে বসে রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের বারহারুয়ার বাসিন্দা আরবিয়া বিবি। তিনি বলেন, “ভাই মন্টু শেখ লঞ্চে পাথর বোঝাই ট্রাক নিয়ে রাজমহল থেকে মালদহে আসছিল। যে আটটি ট্রাক সোমবার রাতে লঞ্চ থেকে গঙ্গায় পড়ে যায়, তার মধ্যে ভাই এর ট্রাকও রয়েছে। তার পর থেকে তার খোঁজ মিলছে না।” ভাই বেঁচে আছে, নাকি মারা গিয়েছে, ঘটনার ২৪ ঘন্টা পরেও স্পষ্ট করে প্রশাসন কিছু জানাচ্ছে না, অভিযোগ করলেন তিনি।

সোমবার রাত সাতটা নাগাদ মানিকচক ঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনায় পাথর বোঝাই আটটি ট্রাক গঙ্গায় তলিয়ে যায়। ঘটনায় ট্রাকগুলির চালক, সহকারী চালকেরাও জলে তলিয়ে যান। অধিকাংশকেই রাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে উদ্ধার করে পুলিশ। পাঁচ জন ভর্তি রয়েছেন মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে এখনও কত জন নিখোঁজ, সেই তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও। পুলিশের দাবি, নিখোঁজ দু'জনের খবর মিলেছে। দু’জনই ঝাড়খণ্ডেরই বাসিন্দা। তবে লঞ্চের এক কর্মীও নিখোঁজ বলে দাবি স্থানীয়দের। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার বলেন, “উদ্ধারের পরেই নিখোঁজের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক থেকে নদীপথে ঝাড়খণ্ডের রাজমহলের দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। দ্রুত যোগাযোগের জন্য দুই রাজ্যের মানুষ জল সীমানাকে ব্যবহার করে। তিনটি লঞ্চ পরিষেবা চালু রয়েছে। দৈনিক আড়াই থেকে তিনশো যাত্রী নদী পারাপার করেন। এ ছাড়া লঞ্চ করে পণ্যবাহী ট্রাকও চলাচল করে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লঞ্চটি বছর দুয়েক ধরে যাতায়াত করছে মানিকচক থেকে রাজমহলে। লঞ্চটিতে ১৪টি গাড়ি বহনের ক্ষমতা আছে বলে দাবি পুলিশের। এ দিন দশটি ট্রাক ছিল লঞ্চে। লঞ্চ পাড়ে পৌঁছতেই একটি ছোট গাড়ি নেমে আসে। ট্রাকগুলি নামতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। প্রথম ট্রাকটি পিছনের ট্রাকটিকে ধাক্কা মারে। এর পরেই রেলিং ভেঙে পরপর ট্রাক গঙ্গায় তলিয়ে যায়। গাড়িতে ১৬ জন ছিলেন। বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করা যায়। তবে এখনও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রশ্ন উঠেছে ফেরিঘাটের পরিকাঠামো নিয়েও। অভিযোগ, ঘাটে জেটি নেই। আলোর ব্যবস্থা নেই। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপির কিসান মোর্চার সহ-সভানেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী ফেরিঘাটের পরিষেবা নিয়ে প্রশাসনের ভুমিকার সমালোচনা করেন। শ্রীরূপা বলেন, “ঘাটটি আন্তঃরাজ্য সীমানা। অথচ ঘাটের পরিকাঠামোই নেই। প্রশাসন একেবারে নির্বিকার।” আহত ও নিখোঁজদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানান তিনি। মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। বিরোধীরা রাজনীতি করতে আসছেন।”

Launch Accident Manikchak
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy