পাহাড়ের রাজনৈতিক সমাধান না করেই যদি গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর নির্বাচন করা হয়, তা হলে অনশনে বসবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। শনিবার মোর্চার দার্জিলিং টাউন কমিটির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিমল গুরুং। ওই বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে মোর্চার তরফে। চুক্তিতে জিটিএ-কে যা যা দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছিল, সেই সব ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমেই যে পাহাড়ের আপাতত রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব, তা-ও স্পষ্ট দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
দার্জিলিঙের একটি বেসরকারি ভবনে মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক করেন বিমল। এ ছাড়াও ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন রোশন গিরি ও দলের অন্যান্য নেতৃত্ব। বৈঠকের পর বিমল স্পষ্ট জানান, মোর্চার সঙ্গে বৈঠক না করে জোরজবরদস্তি যদি জিটিএ নির্বাচন করা হয়, তা হলে আমরণ অনশনে বসা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘২০১১ সালের জিটিএ চুক্তি পূরণের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আজ (শনিবার) একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে মোর্চার পক্ষ থেকে। জিটিএ নির্বাচন নিয়ে রাজ্যে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। তা না করে যদি জোর করে জিটিএ নির্বাচন করা হয়, তা হলে দার্জিলিং মোড়ের সামনে আমরণ অনশনে বসব আমরা।’’
পাহাড়ের মানুষের প্রতিনিধি হিসাবে নিজেকে তুলে ধরে রাজ্য ও কেন্দ্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল মোর্চা। পরে আলাদা রাজ্যের দাবি ঘিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ এবং বিজেপির সঙ্গে সখ্য তৈরি হয়েছিল গুরুংদের। যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেই আবার পদ্মের সঙ্গ ছেড়ে জোড়াফুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান গুরুং। সেই তাল আবার কাটে গত পুরভোটের পর মমতার দার্জিলিং সফরের সময়ে। ওই সফরে জিটিএ ভোট নিয়ে পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকেই মমতার কাছে মোর্চা নেতা রোশনের দাবি ছিল, জিটিএ নির্বাচনের আগে পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করা হোক। জিটিএ নির্বাচন নিয়ে মোর্চা যে বেঁকে বসেছে, তা তখনও মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়েছিল। মমতা বলেছিলেন, ‘‘বিমলদের জিটিএ নির্বাচন নিয়ে কিছু দাবি রয়েছে। সেটা ওঁরা জানাবে।’’