Advertisement
E-Paper

‘ভাল আছি’! উত্তরকাশী থেকে ফোন কোচবিহারের মানিকের, স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন স্ত্রী এবং পুত্র

স্বামীর আটকে পড়ার খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সোমা। ক’দিন জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে। মানিকের উদ্ধারের খবর পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘খুব খুশি, ফিরে আসুক ও বাড়ি।’’

নয়ন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ২২:০১
reaction of family members of Cooch Behar man Manik Talukdar who stuck in Uttarkashi tunnel

বাঁ দিকে উপর থেকে কোচবিহারে পরিযায়ী শ্রমিক মানিক তালুকদারের স্ত্রী এবং পুত্র। —নিজস্ব চিত্র।

বেলা যত গড়াচ্ছিল, ততই অস্বস্তি বাড়ছিল। টিভির সামনে একটু বসে আবার উঠে পড়ছিলেন। ঘরময় পায়চারি করে আবার টিভির সামনে বসে পড়া। এ ভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন ১৭ দিন ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা মানিক তালুকদারের স্ত্রী সোমা। মঙ্গলবার রাতে ফোনটা যখন ফেলেন ধড়ফড় করে উঠে বসেছিলেন। ফোনের ওপার থেকে স্বামীর গলা পেয়ে এক হাত কপালে ঠেকিয়ে ঈশ্বরকে স্মরণ করলেন প্রৌঢ়া। জানালেন, স্বামী ফোন করে জানিয়েছেন তিনি ভাল আছেন। ছেলে মণি কথা বলার আগে ফোনটা কেটে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মানিককে। সোমা এবং মণি দু’জনে এখন ভাবছেন কত তাড়াতাড়ি ঘরের মানুষটা ঘরে ফিরবেন।

মঙ্গলবার, ১৭ দিন পর বদ্ধ সুড়ঙ্গ থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তাঁদের পরিজনেরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। তিনি উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠা পর্যন্ত তাঁদের পাশে দেখা যায় তাঁকে। তার মধ্যেই তুফানগঞ্জে তালুকদার বাড়িতে ফোন আসে। সুড়ঙ্গ থেকে মুক্তির পর মানিক কথা বলেন স্ত্রীর সঙ্গে। স্বামীর সঙ্গে কথা বলার পর স্বস্তি পেয়েছেন সোমা। আটপৌরে শাড়ির উপর চাদর চাপিয়ে জবুথবু হয়ে বসে ছিলেন সোমা। তবে মুখে এ বার প্রশান্তির ছায়া। আসলে স্বামীর আটকে পড়ার খবর পেয়ে নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সোমা। মাঝে ক’দিন জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে বসেই অপেক্ষার দিন গুনছিলেন। স্বামী-সহ ৪১ জন শ্রমিকের উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘দুপুরে জানতে পারলাম যে আজই (মঙ্গলবার) উদ্ধারকাজ শুরু হবে। তখন থেকেই অপেক্ষা করছিলাম। সবাই ভাল আছে, সবাই উদ্ধার হয়েছে, তাতেই আমি খুশি।’’

স্বামীর সঙ্গে কী কথা হল? সোমা বলেন, ‘‘বলল, ভাল আছে। আর কখনও ওকে ঝুঁকির কাজে পাঠাব না।’’ সোমা জানান, উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁর স্বামী মানিককে। টিভিতে স্বামীকে দেখে ঠিক লাগলেও এত দিন আটকে থাকার পর তাঁর শারীরিক কোনও সমস্যা আছে কি না, সেটা দেখার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

মানিকের স্ত্রীর পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ছিলেন ছেলে মণি। বাবার উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনিও খুশি। কলেজপড়ুয়া মণির কথায়, ‘‘খুব ভাল লাগছে। কথা বলতে বলতে ফোনটা কেটে গিয়েছে। এখন চাই, খুব তাড়াতাড়ি বাবা বাড়ি ফিরুক।’’উত্তরকাশীতে ঘটনাস্থলে অনেক দিন আগেই পৌঁছে গিয়েছেন শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা। তবে মণি যেতে পারেননি। পরিবর্তে সেখানে গিয়েছেন মানিকের ভাইপো বিনয় তালুকদার এবং এক পরিচিত। সেখানে গিয়ে কাকার সঙ্গে কথাও বলতে পেরেছেন মানিক। প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় খুশি সোমা এবং মণি। ইতিমধ্যে মানিকের বাড়িতে প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন। কেউ কেউ মিষ্টিমুখ করালেন সোমাকে। চোখের জল মুছতে মুছতে কপালে হাত ঠেকালেন সোমা। বাড়ির বাইরে ফাটছে আতশবাজি।

Uttarkashi Tunnel Rescue Operation Cooch Behar migrant labour family
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy