E-Paper

এ পারে ঢাকের শব্দে মন খারাপ ওঁদের

কাগজে-কলমে ভারতের অন্তর্গত হলেও, এই গ্রামগুলি কাটাতাঁর দিয়ে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া পাহারা পেরিয়ে এ পারে আসা মোটে সহজ নয়।

তাপস পাল

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১০:০০

উৎসবের আলো ঢোকে না কাঁটাতারে ঘেরা জীবনে। মাথাভাঙার মহকুমার শালবাড়ি, সাতগ্রাম মানাবাড়ি গ্রাম দু’টিকে ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে কাঁটাতার। পুজো এলে কাকভোরে এ পার থেকে ঢাকের বোলের আওয়াজ আসে। পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণের শব্দও সীমান্ত পেরিয়ে পৌঁছে যায় ও পারের মহল্লায়। মাঝে জেগে থাকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানদের ভারী বুটের শব্দ।

কাগজে-কলমে ভারতের অন্তর্গত হলেও, এই গ্রামগুলি কাটাতাঁর দিয়ে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া পাহারা পেরিয়ে এ পারে আসা মোটে সহজ নয়। নির্দিষ্ট সময়ের পরে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। ফলে, বাধ্য হয়েই দুপুরের মধ্যে ঠাকুর দর্শন সারতে হয় গ্রামের মানুষকে। দুর্গাপুজো এলেও তাই মনখারাপ মাথাভাঙা ১ ব্লকের শিকারপুরের সাতগ্রাম মানাবাড়ি বুথের ডাক্তারপাড়ার বাসিন্দাদের। তাঁদের আক্ষেপ, দূর থেকে ঢাকের বাদ্যি কানে এলেও, রাতে পুজো দেখা বা সন্ধ্যারতি দেখা হয়ে ওঠে না। শুধু দিনের বেলাতেই কাঁটাতারের ওপারের বাসিন্দারা লুটেরহাট, চেনাকাটা, সাতগাছি বাজারের দুর্গাপুজোয় অংশগ্রহণ করেন। বিএসএফ রাতে ঠাকুর দেখার অনুমতি দিলেও, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সবাইকে এক সঙ্গে ফিরে আসতে হয়। এ পারের মানুষের মতো পুজোয় আনন্দ করার স্বাধীনতা তাঁদের নেই।

শীতলখুচি ব্লকের মহিষমুড়ি শালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা আবার জানাচ্ছেন, ধরলা নদী পেরিয়ে গ্রামে ঢোকা-বেরনোর সময় সীমা চৌকিতে গিয়ে নিজের পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। রাতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে গ্রামে ঢোকা-বেরনো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, ঠাকুর দেখে রাত করে বাড়ি ফিরলে বিএসএফের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সুনীল ডাকুয়া, অতুল বর্মণের কথায়, ‘‘পরিবার নিয়ে এক সঙ্গে দুর্গাপুজায় আনন্দ করা আমাদের ভাগ্যে নেই। তাই ঢাকের বাদ্যি শুনেই আন্দাজ করি, সীমান্তের ও পারে হয়তো শুরু হল মায়ের আরতি। দূর থেকে মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, এ বন্দিদশা ঘুচে আমরাও যেন আতঙ্কহীন, স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mathabhanga India Bangladesh Border

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy