অভিযোগ সংক্রান্ত নথি দেখাচ্ছেন অভিযোগকারিণী। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের লক্ষ লক্ষ টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল মালদহের রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন বিডিও নিশীথ কুমার মাহাতোর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই সরকারি আধিকারিক বেআইনি ভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলার পাম্প বসানোর দরপত্র আহ্বান করেছিলেন। ৭৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়। কিন্তু অভিযোগ এই যে, বেশ কিছু পাম্প না বসিয়েই বিল পাশ করিয়ে দেওয়া হয়। প্রাক্তন ওই বিডিওর পছন্দের কিছু ঠিকাদারকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন রতুয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল নেত্রী শ্যামলী দাস ।
অভিযোগকারিণী জানান, বিডিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি কলকাতা হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, জেলাশাসক এখনও সেই তদন্ত শুরু করেননি। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত প্রাক্তন বিডিও বাঁকুড়া জেলায় ডিএমডিসিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তদন্ত শুরু করার জন্য পুনরায় জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন অভিযোগকারিণী।
এই বিষয়ে মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগটি প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর পাশাপাশি জেলাশাসক জানান, অভিযোগটি যদি মিথ্যা হয়, তা হলেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূলের ওই নেত্রী বলেন, “আমি সভাপতি থাকার সময়ে রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও একের পর এক দুর্নীতি করে যাচ্ছিলেন। আমি বিডিওকে বাধাও দিয়েছিলাম। কিন্তু আমায় অন্ধকারে রেখেই বিডিও ব্লক চালাতেন।” অভিযোগকারিণীর দাবি, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার দুর্নীতিতে যুক্ত প্রাক্তন বিডিও। এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। মালদহ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রণবকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি শ্যামলী দাস যে অভিযোগ জানিয়েছেন, তার তদন্ত তো এখনও শুরুই হয়নি। আসলে তদন্ত শুরু হবেই বা কী করে? তদন্ত হলে তো তৃণমূলের নেতারাই ফেঁসে যাবেন।” একই সঙ্গে তিনি জানান, রাজনৈতিক মতফারাক সত্ত্বেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশ্নে তৃণমূল নেত্রী শ্যামলীর সঙ্গে রয়েছে মালদহ জেলা কংগ্রেস।
দক্ষিণ মালদা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ীর বক্তব্য, মালদহ জেলা জুড়ে বেশ কিছু প্রকল্পে যে ভাবে দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলির কোনও তদন্তই হয়নি। তিনি এই বিষয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy