বিনামূল্যে গ্রামবাসীদের চিকিৎসা করছেন জোয়েব। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণের মধ্যেই বিনামূল্যে বাড়ি বাড়ি চিকিৎসা দিচ্ছেন জেনারেল ফিজিশিয়ান জোয়েব ফারহাদ বিশ্বাস। মালদহ জেলার কালিয়াচকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের কাছে নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন কলকাতার কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের ডিগ্রিধারী জোয়েব।
কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে প্রতিদিন সকালে মোটরবাইকে করে বাড়ি বাড়ি চিকিৎসা দিতে ছুটে চলেন জোয়েব। জন্মসূত্রে কালিয়াচক মোজামপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও ছোট থেকেই তিনি পড়েছেন ভিন রাজ্যে। পরবর্তীকালে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন। কিন্তু কয়েক বছর বাইরে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার পরেও মন টেকেনি জোয়েবের। মাটির টানে গ্রামের দুঃস্থ অসহায় মানুষদের পরিষেবা দিতেই তিনি ফিরে এসেছেন কালিয়াচকে।
ফতেখানি গ্রামের বাসিন্দা সাবিনা বিবি, কামাল হোসেনরা জানিয়েছেন, তাঁরা কখনও কল্পনাও করেননি গ্রামে বসেই চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। তাঁরা বলেছেন, ‘‘গ্রাম থেকে মালদহ শহরে গিয়ে ডাক্তার দেখানো খুবই কষ্টকর। করোনা সংক্রমণের মধ্যে অধিকাংশ ডাক্তার প্রাইভেট চেম্বারে বসছেন না। মেডিক্যাল কলেজে রোগীদের আউটডোরে ঠেলাঠেলি অবস্থা। কিন্তু এখন গ্রামের ছেলে ডাক্তার হয়ে ফিরে এসেছেন। তাই ডাক্তার দেখানো নিয়ে এখন আর আমাদের সমস্যা নেই।’’
জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ জিয়াউল হক বলেছেন, ‘‘শহরে প্রাইভেট ডাক্তার দেখানো খুব কষ্টকর। গ্রামের ছেলে ডাক্তার হয়ে ফিরে এসেছেন। তিনি নিজেই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। রোগী দেখছেন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছেন। আমাদের কাছে উনি এখন দেবদূতের মতোই।’’
জোয়েব বলেছেন, ‘‘ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছি। দীর্ঘদিন বাইরে থেকেছি। এমবিবিএস সম্পূর্ণ করার পর জেনারেল ফিজিশিয়ান হয়ে কলকাতা এবং বাইরের রাজ্যে দীর্ঘদিন প্র্যাকটিস করেছি। কিন্তু মন বসাতে পারি না। গ্রামের মানুষ অনেক কষ্টে আছেন। করোনা সংক্রমণের মধ্যে ওঁদের দেখতে হবে। তাই নিজের জন্মভিটে কালিয়াচকে ফিরে এসেছি। যত দিন পারব, গাঁটের টাকা খরচ করে চিকিৎসা চালিয়ে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy