Advertisement
E-Paper

দে পরিবারে সবার হাতে কাটার চিহ্ন, অক্ষত শুধু বড় ভাই প্রণয়, কেন? রহস্য এখনও কাটেনি

কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, ট্যাংরায় দে পরিবারের তিন মহিলার খুনের ঘটনায় বাইরের কেউ জড়িত নন। দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূনই জড়িত রয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৬
কেন প্রণয়ের হাতে কোনও ক্ষতচিহ্ন নেই, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

কেন প্রণয়ের হাতে কোনও ক্ষতচিহ্ন নেই, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সুদেষ্ণা দে, রোমি দে, প্রসূন দে— তিন জনেরই হাতে ছিল কাটার দাগ। কিশোর প্রতীপ দে-র হাতেও হালকা কাটার দাগ রয়েছে। একমাত্র প্রণয় দে-র হাতেই কোনও ক্ষতচিহ্ন নেই! কেন? সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

প্রণয় নিজে দাবি করেছেন, ভয়ে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তাই নিজের হাত কাটতে পারেননি। তাঁর এই দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, ট্যাংরায় দে পরিবারের তিন মহিলার খুনের ঘটনায় বাইরের কেউ জড়িত নন। দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূনই জড়িত রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন মহিলাকে কে ‘খুন’ করেছেন, সেই নিয়ে দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূন যে বয়ান দিয়েছেন, তাতে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। সে সবই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রণয়, প্রসূন এবং প্রতীপ— তিন জনই বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সুদেষ্ণা এবং রোমির মৃত্যু হয়েছে হাত এবং গলা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে। কিশোরী প্রিয়ম্বদার মৃত্যু হয়েছিল বিষক্রিয়ায়। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, ঘুমন্ত অবস্থাতেই তাঁদের হাতের শিরা এবং গলা কেটে দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসূনের হাতে রয়েছে কাটার দাগ। কিশোর প্রতীপের হাতেও হালকা কাটার দাগ রয়েছে। শুধু প্রণয়ের হাতে কোনও ক্ষতচিহ্ন মেলেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রণয় নিজে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, ভয়ে নিজের হাত কাটতে পারেননি। এই দাবি কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রণয় ঘুমের ওষুধ খেতেন। সেই ওষুধ পায়েসের সঙ্গে মিশিয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রণয় দাবি করেছেন, ঘুমের সময় তাঁর শ্বাসের সমস্যা হত। সেই কারণে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করতেন তিনি। সেই যন্ত্রও মিলেছে বাড়িতে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের মতে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যা করবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন প্রণয় এবং প্রসূন। ১২ ফেব্রুয়ারি দুই ভাই নিজেদের স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। স্বামীদের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন সুদেষ্ণা এবং রোমি। তবে প্রতীপ এবং প্রিয়ম্বদাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। দে ভাইয়েদের দাবি, বাচ্চাদের যাতে সন্দেহ না হয়, তাই ঘটনার দিন তিনেক আগে থেকেই পায়েস খাচ্ছিলেন তাঁরা সকলে। অরুচি কাটাতে পায়েসে তুলসীপাতা, নিমপাতা মেশানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৭ তারিখ রাতে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়েছিলেন দে পরিবারের ছ’জন।

এই পর্যন্ত প্রণয় এবং প্রসূন, দুই ভাইয়ের বয়ান মিলে গিয়েছে। কিন্তু সেই পায়েস খাওয়ার পরের দিন, ১৮ তারিখ থেকে ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়িতে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে প্রণয় এবং প্রসূনের বয়ানের মধ্যে মিল নেই বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীদের একটি সূত্র। প্রসূন দাবি করেছিলেন, তিন মহিলার হাত কী ভাবে কাটা হয়েছিল, তা তিনি জানেন না। ট্যাংরার বাড়িতে তিন মহিলার মৃত্যুর পরে মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫১ মিনিট নাগাদ বেরিয়ে যান প্রণয়, প্রসূন এবং প্রতীপ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূন এবং প্রতীপ গাড়ির সামনের আসনে বসেছিলেন। প্রণয় ছিলেন পিছনের আসনে। তিনি দাবি করেছেন, গাড়ি চালাতে জানতেন না। তাঁর এই দাবিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Tangra Murder Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy