Advertisement
E-Paper

বেড়িয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, মৃত চার জন

সন্তোষবাবু ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। স্ত্রী বেলারানি ও ছোট মেয়ে উমাকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৩
দুর্ঘটনায় দুমড়ে যাওয়া গাড়ি।  সোমবার। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনায় দুমড়ে যাওয়া গাড়ি। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সপরিবার অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল একই পরিবারের তিন জন ও গাড়ির চালকের। গুরুতর জখম ওই পরিবারের আরও পাঁচ জন। রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাঁকুড়া-পুরুলিয়া (৬০ এ) জাতীয় সড়কে, বাঁকুড়ার ছাতনা থানার ভীমপুর এলাকার ঘটনা।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতেরা হলেন সন্তোষ মুখোপাধ্যায় (৭০), তাঁর স্ত্রী বেলারানি মুখোপাধ্যায় (৬৪), মেয়ে উমা মুখোপাধ্যায় (৪২) এবং গাড়িটির চালক সুমন্ত বাস্কে (২২)। সন্তোষবাবুরা বাঁকুড়া সদর থানার বেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সুমন্তর বাড়ি ওই থানারই বারবেদিয়া গ্রামে। গুরুতর জখম হয়েছেন সন্তোষবাবুর ছেলে রাজেন্দ্রপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বৌমা সুতপা মুখোপাধ্যায়, নাতি রনিত ও রোহিত এবং আত্মীয় তন্ময় চক্রবর্তী। উদ্ধার করে প্রথমে তাঁদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। চোট গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে দুর্গাপুরের একটি নার্সিংহোমে পাঠানো হয়েছে। এ দিন তাঁরা কেউ কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তোষবাবু ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। স্ত্রী বেলারানি ও ছোট মেয়ে উমাকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। ছেলে রাজেন্দ্রশেখর কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। শীতে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেই ছেলেকে বাড়িতে আসতে বলেন সন্তোষবাবু। কিছু দিন আগেই রাজেন্দ্রপ্রসাদ স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। রবিবার সকালে একটি গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে যান। ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, একটি ট্রেলার বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ার দিকে তীব্র বেগে যাচ্ছিল। সন্তোষবাবুদের গাড়িটি মুখোমুখি এসে পড়ে। সংঘর্ষের পরেই দু’টি গাড়ি উল্টে রাস্তার পাশের মাঠে পড়ে যায়। দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল সন্তোষবাবুদের গাড়িটি। দুর্ঘটনার পরে চম্পট দেয় ট্রেলার চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সন্তোষবাবু, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও গাড়ির চালকের। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃত ও জখমদের গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার করে। ট্রেলার ও গাড়িটিকেও উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে বেলিয়া গ্রামে। সন্তোষবাবুর বাড়ি এ দিন তালাবন্ধ ছিল। খবর পেয়ে জেলার নানা জায়গা থেকে আত্মীয়েরা গ্রামে এসেছিলেন। বাড়ি সামনে ভিড় করেছিলেন পড়শিরা। সন্তোষবাবুর ভাই সুশীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আর কিছুটা পথ চলে এলেই দাদারা বাড়ি ফিরে যেতেন। খবর শুনেই আমাদের আত্মীয়েরা দুর্গাপুরের ওই নার্সিংহোমে গিয়েছেন।” পড়শি তথা প্রাক্তন শিক্ষক ব্যোমকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সন্তোষদা আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। গত কয়েকদিন ধরেই বাড়ি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গাড়িতে নানা জায়গায় বেড়াতে যাচ্ছিলেন। এমন কিছু ঘটে যাবে, কল্পনাও করিনি।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ট্রেলারের চালকের খোঁজ চলছে। অতিরিক্ত গতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। ঘটনার তদন্ত চলছে।”

Road Accident Dead Chatna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy