Advertisement
E-Paper

ধর্মঘটে গরহাজির, ছাঁটাইয়ের হুমকি

বছর দশেক ধরে গুদামে মুটিয়া মজদুর হিসেবে কাজ করছেন তাঁরা। ধর্মঘটের পক্ষে থেকে একদিন কাজ না করায় শাসকদলের নেতারা তাঁদের ছাঁটাই করার দাবি তুলে অন্য শ্রমিক নিয়োগ করতে সোচ্চার হলেন!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৭
বাঁকুড়ার শ্যামদাসপুরে গুদামের সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভ। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়ার শ্যামদাসপুরে গুদামের সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভ। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বছর দশেক ধরে গুদামে মুটিয়া মজদুর হিসেবে কাজ করছেন তাঁরা। ধর্মঘটের পক্ষে থেকে একদিন কাজ না করায় শাসকদলের নেতারা তাঁদের ছাঁটাই করার দাবি তুলে অন্য শ্রমিক নিয়োগ করতে সোচ্চার হলেন!

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়া শহরের কেরানীবাঁধ এলাকা সংলগ্ন শ্যামদাসপুর এলাকায়। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পুনরায় কাজে বহাল হলেন ধর্মঘটী মজদুরেরা। আবার শাসক দলের দাবি মতো নতুন করে কিছু শ্রমিকও নিয়োগ করতে বাধ্য হলেন গুদাম কর্তৃপক্ষ।

শ্যামদাসপুর এলাকায় একটি গুদামে মুরগির খাবার মজুত করা ও বের করার (লোডিং ও আনলোডিং) কাজ করেন মোট ৩৩ জন মুটিয়া মজদুর। তাঁরা সকলেই সিটু সমর্থক। শুক্রবার সাধারণ ধর্মঘটের দিন তাঁরা কেউই কাজে যোগ দেননি। এলাকার তৃণমূল কর্মীরা গুদামের কাজ সচল রাখতে নতুন করে কয়েক জন মুটিয়া মজদুর এনে কাজে লাগান। শনিবার সকালে সিটুর ওই গুদামের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এলে তাঁদের গুদামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এলাকার তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের আটকে সাফ জানিয়ে দেন, ধর্মঘটের দিন কাজ না করার জন্য তাঁদের আর এই গুদামে কাজ করতে দেওয়া হবে না।

এ নিয়ে গুদামের সামনেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেঁধে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সিটুর জেলা সহ-সভাপতি প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে দেখে তৃণমূল কর্মীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। প্রতীপবাবু বাঁকুড়া সদর থানায় ঘটনাটি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সমস্যা মেটাতে ঘটনাস্থলে আসেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভানেত্রী অলকা সেন মজুমদার। অলকাদেবী, পুলিশ ও গুদাম কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসেন। গুদাম কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ওই ৩৩ জন শ্রমিকের সঙ্গে তৃণমূলের দাবি মতো ধর্মঘটের দিন কাজ করা শ্রমিকদেরও কাজে নেওয়ার আশ্বাস দিলে সমস্যা মেটে। প্রতীপবাবুর অভিযোগ, “ধর্মঘট করার অধিকার সমস্ত শ্রমিকেরই রয়েছে। তার জন্য তৃণমূল কারও কাজ বন্ধ করে দিতে পারে না। এটা অগণতান্ত্রিক ঘটনা।”

ওই গুদামে মুটিয়া মজদুরদের সর্দার প্রদীপ মাল বলেন, “বস্তা বয়ে ন্যূনতম অর্থ রোজগার করে পেট চালান এখানকার শ্রমিকেরা। ধর্মঘটের দিন নানা অশান্তির ভয়েই কাজে যোগ দিইনি আমরা। তার জন্য আমাদের জোর করে তৃণমূলের লোকজন গুদাম থেকে ছাঁটাই করে দিতে চেয়েছিল।” যদিও ধর্মঘটে কাজে যোগ না দিলে সেই শ্রমিককে কাজ থেকেই ছাঁটাই করে দিতে হবে বলে এমন কোনও দলীয় নির্দেশ নেই বলেই জানিয়েছেন আইএনটিটিইউসি-র বাঁকুড়া জেলা সভানেত্রী অলকাদেবী।

তাহলে কেন এমন করলেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা? অলকাদেবী জবাব, “ঘটনাটি এমন কিছু নয়। যাঁরা ধর্মঘটের দিনে কাজ করে গুদাম সচল রেখেছিলেন তাঁদের কাজ দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন এলাকার সাধারণ
মানুষ। তবে কোনও শ্রমিকেরই কাজ কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য কারওই ছিল না।” গুদাম কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে প্রদীপবাবু বলেছেন, “যাঁরা নতুন করে কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে নিয়েই আমরা কাজ করতে চাই। কোনও রকম অশান্তি চাই না।”

TMC strike day Worker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy