প্রতীকী ছবি।
এত দিনে যা হয়নি, পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সক্রিয়তায় তা হল। যার বিরুদ্ধে অনাথ ভাইকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, সেই জেঠতুতো দাদাই এখন হাসপাতালে ভাইয়ের শুশ্রূষা করছে।
পুরুলিয়া হাসপাতালে ভর্তি থাকা তেরো বছরের কিশোর নবীন মাহাতোর পাশে তাই তার দাদা সুধীর মাহাতোকে রাত জাগতে দেখে অনেকেই তাজ্জব হয়ে যাচ্ছেন। চাইল্ড লাইন অবশ্য জানিয়েছে, মুচলেকা দিয়ে সে নিজের ভুলও স্বীকার করেছে— ‘ছোট ভাইকে মেরে ঠিক কাজ হয়নি।’
বরাবাজারের চিরুডি গ্রামের সুধীর এখন কিশোর ভাই নবীনের জন্য ওষুধ-পথ্য এনে দেওয়া থেকে, ভাইকে স্নান করিয়ে দেওয়া— সব এখন নিজেই কাঁধে তুলে নিয়েছে। জেলা চাইল্ড লাইনের কর্তারাও সুধীরের আচরণ পরিবর্তনে খুশি হয়েছেন।
আগেই নবীনের ভাগের চাষের জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সুধীরের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে তার ঘরে কাঠের টুকরো ডাঁই করে রেখে এ বার তাকে ঘরছাড়া করারও মতলব আঁটে সুধীর। নবীন প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করে ঘরছাড়া করার অভিযোগ ওঠে। রাতে গ্রাম থেকে দু’কিমি দূরে একজন তাকে আশ্রয় দেন।
পরের দিন সোমবার খবর পেয়ে চাইল্ড লাইন নবীনকে উদ্ধার করে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। মারের চোটে তার হাত-পা ফুলে যাওয়ায় এক্স-রে করানো হয়। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, হাড় না ভাঙলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে নবীনকে কয়েকদিন চিকিৎসা চালিয়ে
যেতে হবে।
চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটরের সাময়িক দায়িত্বে থাকা অশোক মাহাতো বলেন, ‘‘নবীনের কাছে তার উপরে নির্যাতনের কথা শুনে আমরা আইনি পথে হাঁটার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু ওর দাদা সুধীর নিজের ভুল স্বীকার করে আমাদের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছে। তা ছাড়া এখন দেখছি, সে ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য খুব খাটছেও।’’
পুরুলিয়া সদর থানাও ইতিমধ্যে বরাবাজার থানাকে ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলেছিল।
বুধবার সুধীর দাবি করে, ‘‘সে দিন উত্তেজনার বশে ভাইকে মেরে ঠিক কাজ করিনি। নানা কারণে সে দিন মাথার ঠিক ছিল না। এখন ভাইকে চিকিৎসায় সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’’ নবীনও বলে, ‘‘দাদা সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে। আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করছে। ডাক্তারবাবু বলেছেন, কয়েকদিন পরেই আমাকে ছেড়ে দেবেন।’’
তবে চাইল্ড লাইনের কর্তা জানাচ্ছেন, নবীন বাড়িতে কেমন থাকে, তা জানতে মাঝে মধ্যেই তাঁরা খোঁজ খবর নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy