Advertisement
E-Paper

সেরা দশে বাঁকুড়ারই দশ

মাধ্যমিকে ৬৮২ নম্বর পেয়ে অষ্টম হয়েছে বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের দুই ছাত্রছাত্রী অনমিত্র মুখোপাধ্যায় ও দিশা মণ্ডল। ওই সারিতেই রয়েছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের দেবারতি পাঁজা ও সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রূপ সিংহ বাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০১:৪৫

মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা কৃতীরা কেউ ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। কিন্তু, এ বার মাধ্যমিকে বাঁকুড়ার কৃতীদের কেউ কেউ ভবিষ্যৎ জীবনে প্রশাসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। আবার কম টিউশন নিয়েও যে সাফল্য মেলে, সেই নজিরও দেখিয়েছে কেউ কেউ।

বুধবার মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্রকাশিত মেধা তালিকার সম্ভাব্য প্রথম দশে স্থান পেয়েছে রাজ্যের ৫৬ জন। সেই তালিকায় ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জায়গা করে নিয়েছে বাঁকুড়া জেলারই ১০ জন ছেলেমেয়ে।

জেলার মধ্যে এ বার সর্বোচ্চ নম্বর (৬৮৫) পেয়েছে দুই ছাত্রী। রাজ্যের মধ্যে যৌথ ভাবে পঞ্চম হয়েছে কোতুলপুরের গোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সৌমী নন্দী ও বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের সৃজা পাত্র। দু’জনের মধ্যে মিলও অনেক। দু’জনেই তিনটি করে বিষয়ে ১০০ নম্বর পেয়েছে। সৌমী তার প্রিয় জীবন বিজ্ঞানের মতোই ভূগোল ও গণিতে ১০০ পেয়েছে। আর সৃজা গণিত, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞানে ১০০ নম্বর করে পেয়েছে। দু’জনেরই সব বিষয়ে টিউশন নিয়েছে। দু’জনেই ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়।

সৌমীর কথায়, ‘‘রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম হব ভাবিনি।’’ খবর পেয়েই কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালের আবাসনে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি রায়-সহ স্কুলের সহশিক্ষকেরা। সংবর্ধনা দেয় বিষ্ণুপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরও। সৃজার কথায়, “ঘড়ি ধরে পড়াশোনা আমি করতাম না। পড়াশোনাটাই আমার নেশা। টিভিতে কার্টুন দেখি সময় পেলে।”

মাধ্যমিকে ৬৮৪ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থান পেয়েছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সার্কাস ময়দানের বাসিন্দা শ্রুতি সিংহ মহাপাত্র। গণিত ও ভূগোলে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে সে। নিয়মিত রাজ্য রাজনীতির খবর রাখা শ্রুতি জানিয়েছে, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে ভবিষ্যতে সে প্রশাসনিক মহলে কাজ করতে চায়। তার স্পষ্ট বক্তব্য, “প্রশাসনিক আধিকারিক হয়ে দেশের অগ্রগতির জন্য কাজ করতে চাই।”

মাধ্যমিকে ৬৮২ নম্বর পেয়ে অষ্টম হয়েছে বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের দুই ছাত্রছাত্রী অনমিত্র মুখোপাধ্যায় ও দিশা মণ্ডল। ওই সারিতেই রয়েছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের দেবারতি পাঁজা ও সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রূপ সিংহ বাবু। গণিত ও জীবন বিজ্ঞানে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে অনমিত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি করতে ভালবাসে সে। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছে তার। তবে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়ে স্কুল থেকে নিজের মাকর্শিট আনতে না পারার দুঃখ রয়েছে তার।

শহরের প্রণবানন্দপল্লির বাসিন্দা দিশা গণিত ও জীবনবিজ্ঞানে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে। তার ইচ্ছা ডাক্তারি নিয়ে পড়ে আইএএস পরীক্ষায় বসবে। দিশা বলে, “বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাঁর মতো আমিও আইএসএস অফিসার হতে চাই।” বাঁকুড়ার লোকপুর মৌসুমিপল্লির বাসিন্দা দেবারতি ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে। দেবারতি চিকিৎসক হতে চায়। পড়াশোনার ফাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনা ও গোয়েন্দা গল্পের বই পড়তে সে পছন্দ করে।

কম টিউশন নিয়েও যে ভাল ফল করা যায়, তা করে দেখিয়েছে সিমলাপালের জুনকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রূপ। সে বলে, “গণিত, ইংরেজি, ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে একটি করে টিউশন নিয়েছিলাম। বাকি বিষয়গুলি নিজেই পড়তাম। যেখানে জটিল মনে হতো স্কুলের শিক্ষকদের কাছেই বুঝে নিতাম।” সে গণিত, ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে। ভবিষ্যতে সে ডাক্তার হতে চায়।

স্কুলের ক্রিকেট টিমের বাঁধা খেলোয়াড় সায়ন নন্দী বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬৮১ নম্বর পেয়ে নবম স্থান পেয়েছে। তার কথায়, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে ক্রিকেট খেলেই মাধ্যমিকের সাফল্যের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই।’’ তিলাবাড়ির এই কিশোরের অবশ্য বই-খাতা নিয়ে বসলে অন্য দিকে হুঁশ থাকত না। সে বাবার মতোই চিকিৎসক হতে চায়।

৬৮০ নম্বর পেয়ে যৌথ ভাবে দশম হয়েছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী অন্বেষা দেওঘরিয়া ও বড়জোড়া হাইস্কুলের ছাত্র গৌরব মণ্ডল। বাঁকুড়ার খ্রিস্টানডাঙা উত্তরায়ণের বাসিন্দা অন্বেষা ভূগোল ও জীবনবিজ্ঞানে ১০০ করে নম্বর পেয়েছে। ডাক্তার হতে চায় সে। একই ইচ্ছে বড়জোড়ার ছেলে গৌরবেরও। তবে শুধু পড়াশোনাই নয়, ক্রিকেটও তার নেশা, গৌরব বলে, “পরীক্ষার পরে চুটিয়ে আইপিএল দেখেছি। ক্রিকেট ছাড়া ভাবতে পারি না।’’

Madhyamik result 2018 WBBSE মাধ্যমিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy