১০ বছর বিধায়ক থেকেও বাউড়িদের জন্য কাজ করেননি। শালতোড়া বিধানসভার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বাউড়িকে প্রকাশ্যেই কটাক্ষ করলেন বাউড়ি কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যান দীপক দুলে। স্বপনের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, আবার তাঁকে টিকিট দিলে বাউড়িরা ভোট দেবেন না। দীপকের এই মন্তব্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেন স্বপন। জানান, তাঁর সম্পত্তির হিসাব নির্বাচন কমিশনের কাছে রয়েছে।
চলতি বছর অগস্ট মাসে রাজ্যের বাউরী কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে রদবদল ঘটে। তৃনমূল নেতা দেবদাস বাউড়িকে সরিয়ে ওই পদে বসানো হয় বাঁকুড়ার শিক্ষক নেতা দীপককে। তার পর থেকেই কার্যত প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবদাসের সঙ্গে দ্বন্দ শুরু হয় বর্তমান চেয়ারম্যান দীপকের। সম্প্রতি বাঁকুড়ার মেজিয়ায় সভা করে দীপক দুলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই তোপ দাগেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবদাস এবং শালতোড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক স্বপন।
এ বার মেজিয়ায় তারই পাল্টা সভা করে শালতোড়ার প্রাক্তন বিধায়কের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বর্তমান বোর্ড চেয়ারম্যান দীপক দুলে। দীপক বলেন, “এখানে যিনি ১০ বছর বিধায়ক ছিলেন, তাঁকে আমি বাউড়ি জাতির কুলাঙ্গার বলি। তিনি বাউড়ি সম্প্রদায়ের একটি মানুষের জন্যও কাজ করেননি। তাঁর এখন হঠাৎ বাউড়ি জাতির জন্য পিরিত উথলে পড়ছে। বলছেন বাউরী জাতির কাজ করতে চাই।’’
এখানেই থামেননি দীপক। তিনি বলেন, ‘‘সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে ভোটে জিতে স্বপন ২৫টি ডাম্পার, দোতলা বাড়ি ও আসানসোলে ফ্ল্যাট কিনেছেন। আমি দলকে বার্তা দিতে চাই, ফের ওই কুলাঙ্গারকে টিকিট দেওয়া হলে শালতোড়ার দলিত মানুষ রাস্তায় নেমে বলবে ডাম্পারওয়ালাকে আমরা চাই না।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “শালতোড়া সংরক্ষিত আসনে আমরা যাকে মনোনীত করব, দল তাঁকে প্রার্থী করলে তবেই আমরা তাঁর পাশে থাকব। কাঁধে কাধ মিলিয়ে সব থেকে বেশি ব্যবধানে জয়ী করে আনব তাঁকে।’’
বাউড়ি কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যানের এই মন্তব্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে শাসক তৃণমূলের অন্দরে। তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও পাল্টা বোর্ড চেয়ারম্যানকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ শালতোড়ার প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন। তাঁর বক্তব্য, “তিনি যা বলেছেন, তা অন্ত্যন্ত হাস্যকর ও অসাংবিধানিক। মূর্খের মতো কথা বলছেন বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান। আমি চার বার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। আমার সম্পত্তির সমস্ত হিসাব নির্বাচন কমিশনের কাছে আছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দল কাকে টিকিট দেবে তা দলের ব্যপার। কিছু দিন আগেও বিজেপি করতেন বোর্ড চেয়ারম্যান। আইএসএফ ও কুড়মি সমাজের নেতাদের সঙ্গেও একাধিক বার বৈঠক করেছেন তিনি। সম্প্রতি তৃণমূলে এসে বোর্ড চেয়ারম্যান হয়ে ওই ব্যক্তি এমন কথা বলছেন, যেন তিনিই তৃণমূলের টিকিট দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন।’’