Advertisement
E-Paper

মারধরে চোখ নষ্ট বিজেপি কর্মীর

ঠাকুরদাস বাড়ি ফিরে সব জেনে পুলিশের কাছে ঘটনার পরে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি কৃষ্ণপদ গোপ পলাতক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৫
বাঁকুড়া মেডিক্যালে পিরু সিংহ সর্দার। নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া মেডিক্যালে পিরু সিংহ সর্দার। নিজস্ব চিত্র

একটি চোখ হারাতে হল হুড়ার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বিজেপি কর্মী পিরু সিংহ সর্দারকে। তৃণমূল নেতা-কর্মীর মারে তাঁর এই অবস্থা বলে অভিযোগ পরিবারের। ১৮ নভেম্বর মারধরের পর থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ছেলে ঠাকুরদাস সিংহ সর্দার রবিবার বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা অনেক চেষ্টা করেছিলেন বাবার বাঁ চোখটা বাঁচানোর। তাঁরা জানিয়েছেন, মারধরে চোখটা এতই চোট পেয়েছে, যে একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, পিরুবাবুর মাথা, মুখে গুরুতর আঘাত রয়েছে। ধীরে কথা বলছেন।

ঠাকুরদাস বাড়ি ফিরে সব জেনে পুলিশের কাছে ঘটনার পরে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি কৃষ্ণপদ গোপ পলাতক। তবে অপর অভিযুক্ত কামদেব গোপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও বিজেপি-র অভিযোগ, কৃষ্ণপদ মোটেই পালাননি। এলাকাতেই রয়েছেন। মাঝে মধ্যে তাঁকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতেও দেখা যাচ্ছে।

পিরুবাবু এক সময়ে তৃণমূল করতেন। তবে সম্প্রতি তিনি বিজেপি করতে শুরু করেছেন। অভিযোগ, তাতেই এলাকার তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত কৃষ্ণপদ গোপ ও তাঁর ভাই কামদেব গোপেরা চটে উঠেছেন। ১৮ নভেম্বর তিনি বাড়িতে একা থাকাকালীন তাঁর উপরে ওই দুই ভাই চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধরে করে রাস্তায় ফেলে রেখে যান। ঠাকুরদাস বলেন, ‘‘সে দিন বাড়িতে মা ছিল না। আমিও ছিলাম না। ভাই চেন্নাইয়ে কাজ করে। বাবাকে ঘরের বাইরে ডেকে ওই দু’জন ঘিরে ধরে লাঠি, রড, কুড়ুল দিয়ে মারে।’’

বাঁকুড়া মেডিক্যালের বিছানায় শুয়ে প্রৌঢ় পিরুবাবু বলেন, ‘‘আমি কেন বিজেপিতে গিয়েছি, ওঁরা তা বারবার আমার কাছে জানতে চাইছিল। ওরা আমাকে তৃণমূলে ফিরে আসতে বলছিল। কিন্তু আমি যাব না জানিয়ে দেওয়ায় নির্মম ভাবে মারধর করে চোখটা নষ্ট করে দিল।’’ তিনি জানান, সে দিন ওঁদের এক জন বাইরে থেকে তাঁকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। তিনি বাইরে বেরিয়ে আসতেই কামদেব ও কৃষ্ণপদ দু’জনে মিলে তাঁকে ঘিরে ধরে মারতে শুরু করে। আমি ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করলেও ওঁদের দাপটে পড়শিরা বেরিয়ে এলেও ফের ঘরে ঢুকে পড়েন। কেউ আমাকে বাঁচাতে আসেননি।’’

ঠাকুরদাস বলেন, ‘‘মারধরের পরে বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়েছিল। কেউ তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাননি। সময়ে নিয়ে গেলে হয়তো চোখটা বাঁচানো যেত।’’

রবিবার জেলায় আসা বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু পিরুবাবুর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি পিরুবাবুর সঙ্গে তাঁর গ্রামে গিয়ে দেখা করতাম। কিন্তু তিনি বাঁকুড়ায় ভর্তি রয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসবে, ক্ষমতা ধরে রাখতে এ ভাবেই তত মারমুখী হয়ে উঠবে তৃণমূল। ওই কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব দলই নিচ্ছে।’’

জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘প্রাথমিক ভাবে যা জেনেছি, এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। কোনও গ্রাম্য বিবাদ থেকে ওই গোলমাল হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করছে।’’

BJP TMC beaten Hura Political Clash
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy