E-Paper

অরূপের কুকথা, হুমকি বির্তকে ব্লক সভাপতিও

মুখ্যমন্ত্রী আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন। ওঁর (অরূপ) সৎ সাহস থাকলে এক বার প্রকাশ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামটা প্রকাশ্যে বলুন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

আর জি কর কাণ্ডের আবহে বিরোধীদের আক্রমণ শানাতে কুকথার ফুলঝুরি ছোটাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।

বিরোধীদের ‘কুকুর’ আখ্যা দিয়ে এ বার নতুন বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। শনিবার বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে গড়া ধর্না মঞ্চ থেকে অরূপ বলেন, “এরা (বিরোধীরা) অনেক বেড়ে গিয়েছে। অনেক মিথ্যা অপপ্রচার করছে। এখানে ওখানে গিয়ে মানুষকে বলছে, কন্যাশ্রী-লক্ষ্মীর ভান্ডার-পুজোর অনুদান চাই না। ক্ষমতা থাকলে যাঁরা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা চান না, তাঁদের নিয়ে একটা মিছিল করে দেখাও।”

তার পরেই বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপকে বলতে শোনা যায়, “কুকুরের মতো গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করবে। আর ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলে কাস্তে-হাতুড়ি দেখাবে, ভোটের আগের দিন পদ্মফুলে ভোট দিতে বলবে। তোমাদের কেউ বিশ্বাস করে না।”

দলীয় কর্মীদের উদ্দেশেও তাঁর বার্তা, “ফোঁস করতে হবে। ফোঁস করুন, দেখবেন ওরা কুকুরের পালিয়ে যাবে।”

এক জন নির্বাচিত সাংসদের মুখে এমন ভাষা ভাবা যায় না বলে কটাক্ষ ছুড়ে সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “সিপিএম কখনও সামাজিক প্রকল্পের বিরোধিতা করে না। আর গোটা দেশের মানুষ জানে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সিপিএম লড়াই করে। পদ্মফুলে ভোট দিতে আমরা বলি না। ওরাই বড় ফুল, ছোট ফুল করে বেড়ায়।”

তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন। ওঁর (অরূপ) সৎ সাহস থাকলে এক বার প্রকাশ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামটা প্রকাশ্যে বলুন। বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারও বলেন, “রাজ্য জুড়ে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ দেখে তৃণমূলের লোকেরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাঁদের জাগাতে ফোঁস করতে বলতে হচ্ছে। তবে বাংলার মানুষ যে ভাবে জেগেছেন, তাতে ফোঁস করতে গেলে উল্টে বিষদাঁতই ভেঙে দেবেন তাঁরা।”

এ দিকে, ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখাকে মারধরের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল কোতুলপুরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ নন্দীগ্রামীর বিরুদ্ধে। শনিবার কোতুলপুরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে আর জি করের ঘটনা নিয়ে আয়োজিত পথসভা থেকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আপনারা এলাকায় ওঁকে (অমরনাথ) ব্যারিকেড করে রাখবেন। যে দিন এই রাস্তা দিয়ে অমরনাথ শাখা যাবে, গাড়ি থেকে নামিয়ে মারব। তাঁর মতো আনাচে-কানাচে অনেক গুন্ডা আছে। সবার হিসেব আমরা কড়ায়-গন্ডায় বুঝিয়ে দেব।”

স‌ংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নামে কেউ কুরুচিকর মন্তব্য করলে তা মানা হবে না। অমরনাথের বক্তব্যের প্রতিবাদেই ওই কথা বলেছেন।

পাল্টা অমরনাথ বলেন, “এক মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ করে খুন করা হল। যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে প্রমাণ লোপাট করতে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের নিয়ে আর কী বলব! আমাকে যাঁরা মারবে বলছেন, তাঁরা তো একই ঝাড়ের বাঁশ। আমিও বলে রাখছি, ওঁর বাড়িতে গিয়ে চা-জল
খেয়ে আসব।”

এ দিকে, এলাকায় বিজেপি নেতারা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করলে তাঁদের পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মণ্ডলও। পাল্টা সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামির দাবি, এই সব বলে ওরাই অশান্তি ছড়াচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura kotulpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy