Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

স্বাস্থ্য-বিধি মেনে ‘অসময়ের পাঠশালা’  

কচিকাঁচাদের পড়াশোনায় ফিরিয়ে আনতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে অবৈতনিক ‘অসময়ের পাঠশালা’। সৌজন্যে, ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’।

অভিজিৎ অধিকারী
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২১ ০৬:১৭
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অনলাইন ক্লাসে চলছে পড়াশোনা। তবে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম পাটপুরে সে সব দূর-অস্ত‌্। সেখানে না আছে স্মার্টফোন, না ইন্টারনেট সংযোগ। পেটের টানে ভোর থাকতে থাকতে কাজে বেরনো পরিবারগুলির মা-বাবাদের অনুপস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে করোনা-কালের প্রায় শুরু থেকে। এমন কচিকাঁচাদের পড়াশোনায় ফিরিয়ে আনতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে অবৈতনিক ‘অসময়ের পাঠশালা’। সৌজন্যে, ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’।

এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, সকাল থেকে পাড়া বেরনোর পুরনো অভ্যাস বদলে গাছের নীচে পাতা ত্রিপলে বই খুলে বসেছে দ্বিতীয় শ্রেণির মানসী টুডু, চতুর্থ শ্রেণির আশা মুর্মু বা প্রথম শ্রেণির মাম্পি কিস্কুরা। পড়ুয়ার সংখ্যা সব মিলিয়ে ১৮। মুখে মাস্ক আর হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে দূরত্ব মেপে তাদের বসিয়ে দিচ্ছেন পূজা দাস, অনুষ্কা ঘোষ, সঞ্চিতা চন্দ, সমর্পণ ভট্টাচার্যের মতো শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিশুদের মানসিক বিকাশের পাঠ দিতে দেখা গেল অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিষ্ণুপুরের কিরীটীভূষণ মুখোপাধ্যায়কে। তাঁর কথায়, “স্কুল বন্ধ হলেও আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা অনলাইনে দিব্যি ক্লাস করছে। কিন্তু এ সব আদিবাসী পরিবারগুলির না আছে স্মার্টফোন, না ইন্টারনেটের সুবিধা। এদেরও পড়াশোনা দরকার।”

খেলার ছলে পড়াশোনার ব্যবস্থা দেখে খুশি ধনঞ্জয় টুডু, শিবুলাল টুডুদের মতো অভিভাবকেরা। আর এক অভিভাবক লক্ষ্মীমণি টুডু বলেন, “যখন কাজে বেরোই, ছেলেমেয়েরা ঘুমিয়ে থাকে। দুপুরে এসে রান্না করে খাওয়া-দাওয়া সেরে ফের কাজে যেতে হয়। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বিষয়ে যে ভাবব, সে সুযোগ থাকে না। এই পাঠশালা আশীর্বাদের মতো।”

‘রেড ভলান্টিয়ার্স’-এর পক্ষে বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “আমরা এলাকার খোঁজ-খবর নিতে এসে দেখি, বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে পড়াশোনা থেকে। বাঁধের জলে মাছ ধরছে, খেলে বেড়াচ্ছে সারা দিন। তার পরে, বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সপ্তাহে চার দিন দু’ঘণ্টা করে পাঠশালা চলবে।” এ দিন সংস্থার তরফে শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ ও টিফিন তুলে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE