ফাইল চিত্র
রাজ্যের বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। অনেকের মধ্যে শারীরিক পরীক্ষা না করার প্রবণতা বিপদ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা দফতরের কর্মীদের। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনায় সেই আশঙ্কা জোরাল হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্যের বাইরে থেকে এসে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান এক যুবক। তাঁর শরীরে জ্বরের উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ভর্তি হতে নির্দেশ দেন। অভিযোগ, এর পরেই বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। ওই যুবকের সন্ধানে তল্লাশি চালাতে গিয়ে হন্যে হয়ে পড়েন স্বাস্থ্যকর্মীরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ওই যুবক রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। তখন তিনি রামপুরহাট পুরসভার রেলপাড়ার এলাকার ঠিকানা-সহ একটি ফোন নম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিলেন। কিন্তু রামপুরহাট পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ও চিকিৎসকরা ওই নামের যুবকের কোনও সন্ধান করতে পাননি। ভুল ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানান। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনায় লকডাউনের মাঝে জেলা ও রাজ্যের বাইরে থেকে যাঁরা বাড়ি ফিরেছেন বা ফিরছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এখন স্বাস্থ্য দফতরের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাঁরা এখনও রাজ্যের বাইরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ভেলোর, ব্যাঙ্গালোর, হায়দরাদে আটকে আছেন বা এখনও যে সমস্ত শ্রমিক রাজ্যের বাইরে আটকে আছেন তাঁরা কী উপসর্গ নিয়ে ঘরে ফিরছেন সে ব্যপারেও স্বাস্থ্যকর্মীরা চিন্তায় আছেন। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য জেলার অধীনে হোম কোয়রান্টিনে বিদেশ থেকে আসা ৯৪ জনকে রাখা হয়েছে। রাজ্যের বাইরে থেকে এসেছে এমন ৫ হাজারের বেশি জনকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ স্বপন ওঝা বলেন, ‘‘বাইরের রাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য জেলার অধীন ৮টি ব্লকের প্রতিটিতে প্রায় ৬০০ জনের বেশি বাইরে থেকে এসেছেন। এতজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাটা স্বাস্থ্যকর্মীদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।’’ স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান দিনের পর দিন ওই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এ ছাড়া এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বাইরে চিকিৎসা করাতে যাওয়া বাসিন্দারা বা ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া অনেক শ্রমিক বাড়ি ফেরেননি। তাঁরা ফিরলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা আটকে আছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করে নবান্নে পাঠানো হচ্ছে। নবান্ন থেকে রবিবার দুপুরে মুখ্যসচিবের সঙ্গে এ ব্যাপারে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথাও হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, যাঁরা বাইরে আটকে আছেন তাঁরা প্রত্যেকেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত এলাকা থেকে ফিরবেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে গ্রাম সংসদ স্তরে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, গ্রামীণ চিকিৎসক-সহ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সহযোগিতা দরকার বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা জানান।
এ দিকে শনিবার রাতে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে বিদেশ থেকে আসা চারজনকে ষাটপলসা এলাকায় চরম অব্যবস্থার মধ্যে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোয়রাণ্টিমে রাখার নামে একসঙ্গে অনেককে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা চিকিৎসকেরা করবেন। কিন্তু তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা ব্লক প্রশাসন থেকে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কী হয়েছে সেটা ব্লক প্রশাসন বলতে পারবে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy