Advertisement
০২ মে ২০২৪
Life Sentence

স্ত্রীকে খুন করে পুঁতে দেওয়ার মামলায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ বাঁকুড়ার আদালতের

২০১৫ সালে স্ত্রীকে খুন করে মেঝেতে পুঁতে দেন মুলুকচাঁদ। সেই মামলায় গত শনিবারই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল বাঁকুড়ার আদালত। সোমবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মুলুকচাঁদকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

মুলুকচাঁদকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪৬
Share: Save:

স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ পুঁতে দেওয়ার ঘটনায় স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা দায়রা আদালত। ২০১৫ সালে পুর্ব বর্ধমানের বেলনা গ্রামে নৃশংস ভাবে বধূ পূজা বাউরীকে খুন করে দেহ লোপাট করা হয়। ওই ঘটনায় শনিবার মৃতার স্বামী মুলুকচাঁদ সেনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল বাঁকুড়া জেলা দায়রা আদালত। সোমবার আদালত মুলুকচাঁদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-এর গোড়ায় বাঁকুড়া শহরের আশ্রমপাড়া এলাকার বাসিন্দা পূজার সঙ্গে বিয়ে হয় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের কাছে বেলনা গ্রামের যুবক মুলুকচাঁদের। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে পূজার উপর নির্যাতন চলত বলে অভিযোগ। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই, ৭ এপ্রিল পূজা শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। খোঁজ নিতে গেলে মুলুকচাঁদ পূজার বাপের বাড়িতে জানান, পূজা ট্রেনে চেপে বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। তার পর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। মুলুকচাঁদের এই বক্তব্যে সন্দেহ হওয়ায় পূজার বাপেরবাড়ির লোকজন ২০১৫-এর ১৪ এপ্রিল বাঁকুড়া সদর থানায় স্বামী মুলুকচাঁদ, শ্বশুর পিরু সেন ও শাশুড়ি শ্যামলী সেনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে শ্বশুর পীরু এবং শাশুড়ি শ্যামলীকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ দু’বছর ফেরার থাকার পর মুলুকচাঁদও গ্রেফতার হন। মুলুকচাঁদ গ্রেফতার হতেই রহস্য ফাঁস হয়। অভিযুক্ত মুলুকচাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৭-এর ৭ নভেম্বর বেলনা গ্রামের মদন সর্দারের বাড়ির মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার হয় ৮০টি হাড়। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা শাঁখা, নোয়া, পলা ও একটি চটের ব্যাগের টুকরো দেখে হাড়গুলি পূজার বলে চিহ্নিত করেন পূজার বোন লক্ষ্মী বাউরি। হাড়গুলির ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়।

পূজাকে খুন করা হয়েছে এ ব্যাপারে তথ্য হাতে আসতেই পুলিশ মামলায় খুনের ধারা যুক্ত করে মামলা শুরু করে। এই মামলায় যুক্ত সহকারী সরকারি আইনজীবী অতনু দে বলেন, ‘‘মামলা চলাকালীন মৃতার শ্বশুরের মৃত্যু হয়। প্রমাণের অভাবে খালাস পান শাশুড়ি। আদালত মোট ৩৪ জন সাক্ষ্য ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্ত্রীকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের ঘটনায় মুলুকচাঁদ সেনকে দোষী সাব্যস্ত করে। খুনের ঘটনায় সোমবার মুলুকচাঁদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। অন্য দিকে সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মুলুকচাঁদকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।’’ রায়দানের পর মুলুকচাঁদ বলেন, ‘‘আমি উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Town Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE