Advertisement
E-Paper

পুরোদমে চালু হোক হাসপাতাল, দাবি

এলাকায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হওয়ার ঘোষণা শুনে স্বাস্থ্য পরিষেবার ঘাটতি মিটবে বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন বড়জোড়ার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ঘোষণার বছর খানেকের মধ্যে হাসপাতাল চালুও হয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৮:৪৮
বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।

বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।

এলাকায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হওয়ার ঘোষণা শুনে স্বাস্থ্য পরিষেবার ঘাটতি মিটবে বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন বড়জোড়ার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ঘোষণার বছর খানেকের মধ্যে হাসপাতাল চালুও হয়ে গিয়েছে। তবে সেই হাসপাতাল থেকে পরিষেবা মিলছে কেবলই বহির্বিভাগ বা আউট-ডোরে। অন্তর্বিভাগ বা ইন-ডোর পরিষেবা চালু না হওয়ায় এলাকাবাসীর খেদ এখনও রয়েই গিয়েছে। নানা মহলে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটিকে পুরোদমে চালু করার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বড়জোড়ায় ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে এলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেসের চেয়ারপার্সন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যদিও তাঁর হঠাৎ বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে আসার কারণ কী, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমাদেবী। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছি। এর বেশি কিছুই বলব না।’’ একই সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও ‘সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলা যাবে না’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও প্রশাসনের বিশেষ সূত্রের খবর, ইন-ডোর পরিষেবা চালু করার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে কিনা, তা দেখতেই এ দিন এখানে এসেছিলেন তিনি। এ দিন হাসপাতালে ঢুকে চার তলার বিভিন্ন অপারেশন থিয়েটার ঘুরে দেখেন চন্দ্রিমাদেবী। এর পর আউট-ডোরেও যান। পরিদর্শন শেষে হাসপাতালে উপস্থিত স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে ঘণ্টা খানেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন।

প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা বড়জোড়ার এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গত বছর নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয়। প্রাথমিক ভাবে ১৪ জন ডাক্তারকে নিয়ে হাসপাতালটি চালু হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে ন’জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বদলি করে বড়জোড়ায় নিয়ে আসা হয়। স্বাস্থ্য ভবন থেকে তিন জন ডাক্তারকে পাঠানো হয়। এ ছাড়া, আরও দু’জন ডাক্তার নিয়োগ করা হয় এই হাসপাতালে। আউটডোরে শিশুরোগ, স্ত্রী-রোগ, নাক-কান-গলা, দন্ত ও চক্ষু চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে। এ ছাড়াও জেনারেল মেডিসিন এবং আয়ুশের চিকিৎসাও মিলছে বহির্বিভাগে। তবে ৩০০ শয্যার এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এখনও ইন-ডোর পরিষেবা চালু হয়নি। যার ফলে বড় কিছু অসুস্থতায় পড়লে এখনও বাঁকুড়া মেডিক্যালেই ছুটতে হচ্ছে বড়জোড়ার বাসিন্দাদের।

এ দিনই বড়জোড়া হাসপাতালের আউট-ডোরে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন সাহারজোড়ার বাসিন্দা চৈতন্য ভান্ডারি। তাঁর কথায়, “আগে ছোটখাটো বিষয়েও বাঁকুড়ায় ছুটতে হত। এখন এই হাসপাতালে বহির্বিভাগ চালু হওয়ায় কিছুটা হয়রানি কমেছে। পুরোদমে এই হাসপাতাল চালু হয়ে গেলে আমাদের আর বাঁকুড়া যেতে হবে না।’’ সাহারজোড়ার আর এক বাসিন্দা অশোক খড়ুই বলেন, “পরিবারের কেউ বড় অসুখে আক্রান্ত হলে বাঁকুড়া ছোটা ছাড়া গতি নেই। এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা চালু না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ভোগান্তি কমবে না।’’ বড়জোড়ার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জেলার অন্যান্য ব্লক থেকেও লোকজনও আসছেন চিকিৎসার জন্য। এ দিনই যেমন হাসপাতালের আউটডোরে এসেছিলেন সোনামুখীর পিয়ারবেড়া গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের মল্লিক। বললেন, “বড়জোড়ায় এই হাসপাতাল গড়ে ওঠায় আমাদের সুবিধাই হয়েছে। এত দিন চিকিৎসার জন্য আমাদের হয় বিষ্ণুপুর, না হলে বাঁকুড়া ছুটতে হতো। তুলনায় বড়জোড়া অনেকটাই কাছে।’’

বস্তুত, জেলায় বড়জোড়া ছাড়াও ছাতনা, ওন্দা ও বিষ্ণুপুরে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়া হয়েছে। সবগুলিতেই আউটডোর পরিষেবা মিললেও ইনডোর পরিষেবা চালু হয়নি। চন্দ্রিমাদেবী এ দিন বড়জোড়ার পরে ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও পরিদর্শনে যান। বাঁকুড়া মেডিক্যালের এক আধিকারিক বলেন, “দিনের পর দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালের উপর রোগীর চাপ বেড়েই চলেছে। অথচ আমাদের পরিকাঠামোও কম। জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলি চালু হয়ে গেলে মেডিক্যালের উপর চাপটা অনেকটাই কমে যাবে। কমবে সাধারণ মানুষের হয়রানিও।’’

কবে পুরোদমে চালু হবে এই হাসপাতালগুলি, সেটাই এখন দেখার।

chandril bhattacharya Mamata banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy