Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি কাঁটা সরিয়ে হ্যাটট্রিক শতাব্দীর

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শতাব্দী এগিয়ে রয়েছেন ৮১ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে।

বিজয়িনী: সিউড়ির ভোটগণনা কেন্দ্রে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

বিজয়িনী: সিউড়ির ভোটগণনা কেন্দ্রে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৫:৪৪
Share: Save:

জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়। বিজেপি কাঁটা সরিয়েই।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শতাব্দী এগিয়ে রয়েছেন ৮১ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে।

রাজ্যের অন্য অনেক প্রান্তে দলের আশানুরূপ ফলাফল না হলেও, নিজের কেন্দ্র ধরে রাখতে পারে খুশি শতাব্দী। তিন বারের জন্য সংসদে পা রাখার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার পরে শতাব্দী বলছেন, ‘‘সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মানুষের ভালবাসায় জয় পেয়েছি।’’ ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, কর্মী-সমর্থকেদেরও।

‘ট্র্যাক রেকর্ড’ যথেষ্ট ভাল থাকলেও, এ বারের ভোটে বীরভূম কেন্দ্রে শতাব্দী প্রার্থী না-ও হতে পারেন, এমন জল্পনা ছড়িয়েছিল। শোনা গিয়েছিল, ওই কেন্দ্রে লড়তে পারেন তৃণমূল জেলা সভাপতির ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’ তথা দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ। এমনও রটেছিল, সাংসদ হিসেবে শতাব্দী যত ভাল কাজই করুন, দলের সংগঠন মজবুত করার ক্ষেত্রে তাঁকে নাকি তেমন ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ তিনি বীরভূমে সব সময় থাকেন না। জল্পনা ছড়িয়েছিল, শতাব্দী প্রার্থী হন, তা নাকি চান না খোদ অনুব্রতও। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কেন্দ্রে শতাব্দীকেই প্রার্থী করেন।

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, শুরুর দিকে তা নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে কিছুটা জড়তা ছিল। আশঙ্কা ছিল কর্মীদের সহযোগিতা পাওয়া নিয়েও। একাধিক জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় শতাব্দীকে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সে সব মিটিয়ে প্রার্থীকে জেতাতে ঝাঁপান সকলেই। অনুব্রত বলেছিলেন, ‘‘শতাব্দী ১২ লক্ষ ভোট পাবেন।’’

দশ বছর আগে ‘নতুন মুখ’ হিসেবে বীরভূম আসনে প্রার্থী হয়েই বাজিমাৎ করেছিলেন শতাব্দী৷ সে বার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, সেই সময়েও অনুব্রতের সঙ্গে শতাব্দীর সম্পর্ক ‘মসৃণ’ ছিল না। মূলত আশিসবাবুর উপরে নির্ভর করেই রুপোলি পর্দার নায়িকা তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে ‘ঝড়’ তুলেছিলেন প্রচারে। তার তীব্রতা এতটাই ছিল, সিপিএম প্রার্থী ব্রজ মুখোপাধ্যায়কে পরাজিত করে জয়ী হন শতাব্দীই।

তৃণমূল সূত্রে খবর, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে শতাব্দীর সঙ্গে সম্পর্ক তুলনায় মসৃণ হয় অনুব্রতের। দলও দ্বিতীয় বারের জন্য ভরসা রাখে শতাব্দীর উপরেই। ২০১৪ সালে বিজেপির তারকা প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও বামফ্রন্টের কামরে এলাহিকে অনেক পিছনে ফেলে ফের জয়ী হন শতাব্দীই।

তবে এ বার চেনা মাঠে জয় যতটা অনায়াস মনে করা হয়েছিল, ততটা সহজ হয়নি। বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল যথেষ্ট লড়েছেন। ফলঘোষণার সময় যুযুধান দুই প্রার্থীর ‘লিড’ নিয়ে টানাপড়েন দেখে উদ্বেগে পড়েছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। ৩৮ হাজারের বেশি লিড এক সময় কমে ২৩ হাজারের কাছাকাছি নেমে এসেছিল।

কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন শতাব্দীই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Results 2019 Satabdi Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE