Advertisement
E-Paper

রসগোল্লাও সবুজ মিছিলে

মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পরেই জেলা প্রশাসনের তরফে বিনা ভোটে জেতা প্রার্থীদের শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে বিরোধীরা কখনও হাইকোর্ট, কখনও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৫
 তৈরি: সোনামুখী বাজারে শুক্রবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

তৈরি: সোনামুখী বাজারে শুক্রবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

দেওয়াল আলমারির তাকে শোভা পাচ্ছে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার শংসাপত্র। একেবারে ল্যামিনেট করা। তার পরেও স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায় জেনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন এমন অনেকেই। ছাতনার এক তৃণমূল নেতা তো বলেই ফেললেন, “ভয় হতো, শংসাপত্রটা হাতে এসেও শেষ পর্যন্ত আবার না ফস্কে যায়! রায়টা শুনে নিশ্চিন্ত হলাম।’’

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ৪৬টি আসন। ৩১টিতেই শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিল না। পঞ্চায়েত সমিতির ৫৩৫টি আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ৩৪১টি। গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন ২৫০৫টি। ১৫৯৩টি আসনে লড়াই হয়নি। মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পরেই জেলা প্রশাসনের তরফে বিনা ভোটে জেতা প্রার্থীদের শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে বিরোধীরা কখনও হাইকোর্ট, কখনও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। চলেছে টানাপড়েন। অজানা আশঙ্কায় কমবেশি ভুগছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা অনেক প্রার্থী। ওই আসনগুলির ভবিষ্যত কী হয়, তা নিয়ে গুঞ্জন চলছিল প্রশাসনের অন্দরেও।

শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে গিয়েছে। কোর্ট জানিয়েছে, নতুন করে কোনও আসনে আর ভোট হবে না। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান জানান, দলের তরফে আজ, শনিবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তিনি বলেন, “দল কোন পথে এগোবে তা নিয়ে ওই বৈঠকে আমরা আলোচনা করব। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের বিষয়টিও দলীয় ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত গঠন করার প্রক্রিয়া গতি পাবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে।”

এ দিকে, ইতিমধ্যেই জেলার ১৯০টি গ্রামপঞ্চায়েতের মেদায় উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশে ওই গ্রামপঞ্চায়েতগুলিতে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন বিডিওরা। আগামী ১ সেপ্টেম্বর জেলার ২২টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ১২ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আগামী মঙ্গল ও বুধবার জেলার ৪৯টি গ্রামপঞ্চায়েত ও ৬ সেপ্টেম্বর জেলার ছ’টি পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু যে পঞ্চায়েত বা সমিতিতে একটি আসনও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বী, সেখানে রায় বেরনো পর্যন্ত বোর্ড গড়া হবে না বলে জানিয়েছিল প্রশাসন।

সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় অন্য পঞ্চায়েত, সমিত বা জেলা পরিষদেও বোর্ড গঠনে কোনও বাধা থাকল না বলেই জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নবকুমার বর্মন বলেন, “আগে জারি করা বিজ্ঞপ্তি মেনে নির্দিষ্ট দিনেই ৪৯টি গ্রামপঞ্চায়েত ও ছ’টি পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গড়া হবে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের নতুন নির্দেশিকা জারি হলে বাকি পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদে বোর্ড গড়ার দিন জানা যাবে।”

বিষ্ণুপুর মহকুমায় এ বারের পঞ্চায়েতে কোনও ভোটই হয়নি। সব আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। এ দিন বিভিন্ন ব্লকে উৎসবে মেতেছিলেন শাসকদলের নেতা কর্মীরা। ছিল সবুজ আবির। সোনামুখী শহরে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্যদের নিয়ে মিছিল বেরিয়েছিল। সেখানে পথচারীদের সবুজ রসগোল্লা খাওয়ানো হয়। বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার এ দিনও অবশ্য বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত ভোটে নিজের মত দেওয়ার সুযোগ পাননি। আগামী লোকসভা ভোটে এর প্রতিফলন ঘটবে বলে আমরা নিশ্চিত।’’ সহ-প্রতিবেদন: শুভ্র মিত্র

TMC Supreme Court Rasgulla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy