Advertisement
E-Paper

থিতু হয়ে আবার পড়াবেন

স্বামীর মৃত্যুর পরে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল তাঁকেই। এ বার সেই হাত ধরল টোটোর স্টিয়ারিং। আর প্রথম সওয়ারি হলেন খোদ পুরুলিয়ার জেলাশাসক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৩
প্রত্যয়ী: উদ্বোধন করছেন জেলাশাসক। চালকের আসনে পুতুল। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যয়ী: উদ্বোধন করছেন জেলাশাসক। চালকের আসনে পুতুল। নিজস্ব চিত্র

স্বামীর মৃত্যুর পরে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল তাঁকেই। এ বার সেই হাত ধরল টোটোর স্টিয়ারিং। আর প্রথম সওয়ারি হলেন খোদ পুরুলিয়ার জেলাশাসক।

তিনি পুতুল রাজোয়াড়। পুরুলিয়া শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেওয়া (রাইজ় এম্পাওয়ার উইমেন অ্যারাউন্ড) তাঁকে দিয়েছে একটি টোটো। শহরে হিন্দিভাষীদের সঙ্গে সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছিলেন। তাঁর হাত দিয়েই প্রতীকি ভাবে টোটো দেওয়া হয়েছিল পুতুলকে। এ দিন নিজের অফিস চত্বরে ফিতে কেটে সেই টোটোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়।

পুরুলিয়া শহরের গোশালা এলাকার বাসিন্দা পুতুল। স্বামী একটি খাটালে কাজ করতেন। বছর তিনেক আগে মৃত্যু হয় তাঁর। নাবালক দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছিলেন ওই যুবতী। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ নিতে হয়। ইতি টানতে হয় সন্তানদের লেখাপড়ায়।

‘রেওয়া’-র সদস্য রুবি সুলতানিয়া, কবিতা আগরওয়াল, শিপ্রা লাট, সুনীতা আগরওয়ালেরা বলেন, ‘‘আমাদের কারও কারও বাড়িতেই গেরস্থালির কাজে সাহায্য করতেন পুতুল। ওঁর অসহায় অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল কিছু একটা করা দরকার।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, টোটো চালানোর প্রস্তাব শুনে গোড়ায় চমকে উঠেছিলেন পুতুল। ভরসা দেওয়া হয় তাঁকে।

এলাকার টোটো চালকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের টোটোতেই মাঠে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় পুতুলকে। ব্যাপারটা রপ্ত হয়ে গেলে টোটো কেনার উদ্যোগ হয়। সংগঠনের সদস্যরা জানাচ্ছেন, জেলাশাসক প্রথম থেকেই এই উদ্যোগে প্রয়োজনীয় প্রশসানিক সাহায্য করেছেন।

সংস্থাটি পুতুলকে দিয়েছে নীল রঙের পোশাক। সেটি পরেই এ দিন টোটোর চালকের আসনে বসেছিলেন তিনি। ফিতে কেটে উদ্বোধনের পরে সওয়ারি হন ডিএম। ভাড়াও দেন। তিনি বলেন, ‘‘শহরে তো বটেই, জেলাতেও মহিলা টোটো চালক এই প্রথম।’’

কিন্তু একটা মুশকিল রয়েছে। পুতুলের বাড়িতে কারেন্ট নেই। টোটোয় চার্জ দেবেন কী করে? ‘রেওয়া’-র সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কারও বাড়ি থেকেই আপাতত সেটা করে নেবেন পুতুল। তাঁর বাড়িতে যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ আনানো যায়, সেটাও দেখছেন তাঁরা।

আর পুতুল বলছেন, ‘‘একটু থিতু হই। আবার ছেলেমেয়েগুলোকে স্কুলে পাঠাব।’’

Poverty Toto Toto Driver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy