Advertisement
E-Paper

হাসপাতাল-পালিয়ে কুয়োয় ঝাঁপ রোগীর

বাঁকুড়া মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাঁকুড়া সদর থানার জামবনি এলাকার ওই বাসিন্দা। ঠাঁই হয়েছিল মেডিসিন বিভাগের বারান্দায়। দেখাশোনার জন্য তাঁর সঙ্গেই থাকছিলেন স্ত্রী। শুক্রবার সকালে একটা কাজে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে দেখেন, হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়েই উধাও স্বামী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০৮:৫০
এই সেই কুয়ো। নিজস্ব চিত্র

এই সেই কুয়ো। নিজস্ব চিত্র

কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় ভর্তি হয়েছিলেন বাঁকুড়া মেডিক্যালে। সেখান থেকে আবার হাওয়া! চারিদিকে খোঁজ-খোঁজ রব। এ দিকে রোগী ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে গিয়েছেন গৃহস্থের কুয়োর সামনে। দিয়েছেন ঝাঁপ। তবে শেষ পর্যন্ত অঘটন কিছু ঘটেনি। বালতি ফেলে টেনে তোলা হয়েছে তাঁকে। আর শুক্রবার দিনভর শহর উত্তেজনায় থেকেছে টানটান।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাঁকুড়া সদর থানার জামবনি এলাকার ওই বাসিন্দা। ঠাঁই হয়েছিল মেডিসিন বিভাগের বারান্দায়। দেখাশোনার জন্য তাঁর সঙ্গেই থাকছিলেন স্ত্রী। শুক্রবার সকালে একটা কাজে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে দেখেন, হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়েই উধাও স্বামী।

পরের দৃশ্য, শহরের কেন্দুয়াডিহির রামমোহনপল্লিতে। সেখানে গৌতম মণ্ডলের বাড়ি। গৌতম পেশায় শিক্ষক। সকালে স্কুলে চলে গিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছেন মা, ছেলে-সহ কয়েকজন। হঠাৎ বাড়িতে শোরগোল! ছুটে আসেন পড়শিরা। দেখা যায়, কুয়োয় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। স্থানীয় বাসিন্দা নিত্যানন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দড়ি ফেলে লোকটিকে উদ্ধার করি।” দেখা যায়— হাতে স্যালাইনের চ্যানেল। ফোনে খবর দেওয়া হয় থানায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ আসতে বিস্তর দেরি করেছে। তবে সদর থানার দাবি, খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিল পুলিশ।

পালালেন কেন? রোগীর বক্তব্য, ‘‘হাসপাতালে গণ্ডগোল হচ্ছিল। ভয়ে চলে এসেছিলাম।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোড়ায় নাম-পরিচয়ও ঠিক করে বলতে পারছিলেন না ওই ব্যক্তি। কুয়োর পাড়ে পড়েছিল তাঁর ব্যাগ। তাতে ছিল মোবাইল। ফোন নম্বর বের করে পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। ছুটে আসেন রোগীর স্ত্রী। তিনি বলেন, “বাড়িতে জরুরি কাজ ছিল বলেই গিয়েছিলাম। হাসপাতালে ভর্তি রোগী নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে চলে যেতে পারে ভাবিনি।”

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। গত কয়েক মাসে বাঁকুড়া মেডিক্যাল থেকে রোগী পালানোর মোট তিনটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সব ক্ষেত্রেই পরে অবশ্য রোগীদের উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে একই ঘটনা ফিরে ফিরে ঘটায় প্রশ্ন উঠছে— দায় কার? বাঁকুড়া মেডিক্যালের ভারপ্রাপ্ত সুপার গৌতমনারায়ণ সরকার বলেন, ‘‘এই হাসপাতালে রোগীর চাপ মাত্রাতিরিক্ত। সব রোগীর সঙ্গে এক জন করে আত্মীয়কে থাকতে দেওয়া হয় তাঁদের চোখে চোখে রাখার জন্য। তবে রোগী পালানোর মতো ঘটনা রুখতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

ওই রোগীকে উদ্ধার করার পরে ফের নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যালে। গৌতমনারায়ণ বলেন, “বিষ খাওয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। তার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় সাময়িক মানসিক বিকার হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল।” গৌতমের বাড়ির কেউ এ দিনের ঘটনা নিয়ে কিছু বলতে চাননি। গৌতম নিজে বলেন, ‘‘আমি এবং স্ত্রী ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলাম না। ফিরে শুনলাম এলাকার অনেকের বাড়িতে গোলমাল পাকিয়ে লোকটি আমাদের বাড়িতে ঢুকেছিল। সুস্থ ভাবে তাঁকে যে উদ্ধার করা গিয়েছে, সেটাই
স্বস্তির কথা।’’

Patient Hospital Water Well
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy