E-Paper

খানাখন্দে ভরা বিকল্প রাস্তা যেন বিভীষিকা

ঘুরপথের ওই রাস্তা দু’টি সাত থেকে ন’কিলোমিটার। অভিযোগ, তার মধ্যে অধিকাংশ জায়গাই খানাখন্দে ভরে উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪২
বেহাল বাঁকড়াডাঙার বিকল্প রাস্তা।

বেহাল বাঁকড়াডাঙার বিকল্প রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের কাজের জন্য আদ্রা থেকে রঘুনাথপুর যাওয়ার মূল রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু বিকল্প যে দু’টি রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে, সেগুলির উপযুক্ত সংস্কার না করায় বর্ষায় ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এতে সমস্যায় পড়েছেন গাড়ি চালকেরা। মাঝে মধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। তবে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে রঘুনাথপুরের মহকুমা প্রশাসন।

বর্তমানে আদ্রা থেকে রঘুনাথপুরগামী এবং কাশীপুর থেকে আদ্রা হয়ে রঘুনাথপুর যাওয়ার গাড়িগুলিকে বিকল্প দু’টি রাস্তায় ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।কাশীপুর থেকে আদ্রা হয়ে রঘুনাথপুরগামী বাস, পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে আদ্রার ডিআরএম অফিস হয়ে মনপুরা লেভেল ক্রসিং, এফসিআই গুদাম, বড়বাগান, গোঁসাইডাঙা হয়ে রঘুনাথপুর শহরের মহকুমা ক্রীড়াঙ্গন স্টেডিয়াম পর্যন্ত ঘোরানো হচ্ছে। এ দিকে অটো, টোটো ও অন্য ছোট গাড়িগুলিকে আদ্রার লেভেল ক্রসিং হয়ে মনিপুর গ্রাম, বাঁকড়াডাঙা হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আদ্রা-রঘুনাথপুর সড়কে।

ঘুরপথের ওই রাস্তা দু’টি সাত থেকে ন’কিলোমিটার। অভিযোগ, তার মধ্যে অধিকাংশ জায়গাই খানাখন্দে ভরে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে গাড়ির মালিকেরা জানাচ্ছেন, বিকল্প রাস্তাগুলি আগে থেকেই সঙ্কীর্ণ ও বেহাল ছিল। যাত্রিবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত না করেই সেখানে বিকল্প পথ করা হয়েছে। এতে সমস্যা বেড়েছে।

আদ্রার এফসিআই গুদাম থেকে বড়বাগান ও গোসাইডাঙা গ্রাম হয়ে রঘুনাথপুরের মহকুমা ক্রীড়াঙ্গন পর্যন্ত অহল্যাবাই রাস্তার খানাখন্দে মাটি, পাথর দিয়ে জোড়াতাপ্পি দেওয়া হলেও বৃষ্টিতে তা ধুয়েমুছে গিয়েছে। মনিপুর হয়ে বাঁকড়াডাঙা গ্রামের বেহাল রাস্তাতেও যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কাশীপুরের ঘাট রাঙামাটি গ্রাম থেকে আদ্রা ও রঘুনাথপুর হয়ে পুরুলিয়াগামী একটি বাসের মালিক দীনেশ মণ্ডল বলেন, "বৃষ্টিতে ওই বেহাল রাস্তা একেবারেই চলাচলের উপযুক্ত নয়। একে অনেকটা পথ ঘুরতে হচ্ছে। তার উপরে রাস্তা বেহাল হওয়ায় যন্ত্রণা বেড়েছে। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বাড়ছে।’’ আদ্রার এক পরিবহণ ব্যবসায়ী শমীক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ যাত্রীদের তো বটেই, রোগীদেরও ওই পথেই নিয়ে যেতে হচ্ছে। সবার কষ্ট বেড়েছে।’’

এ দিকে ওই দুই রাস্তা লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দারাও সমস্যায় পড়েছেন।তাঁরা জানাচ্ছেন, দৈনন্দিন কাজে তাঁদের রঘুনাথপুর, আদ্রায় ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। স্থানীয় স্কুলে ওই পথেই যায় পড়ুয়ারা। একে রাস্তায় গাড়ি চলাচল বেড়েছে। তার উপরে বেহাল অবস্থার জন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আদ্রার নিগমনগর এন এস স্কুলের পড়ুয়া শঙ্খদীপ বাউরি, প্রিয়া কুম্ভকার, নীলকান্ত কুম্ভকার বলে, ‘‘প্রায়ই স্কুলে যাওয়ার সময় সাইকেল থেকে অনেকে পড়ে যাচ্ছে। কাদা মাখা পোশাকে যেতে হচ্ছে স্কুলে।’’

ওই স্কুলের এক শিক্ষাকর্মী তথা বড়বাগান গ্রামের বাসিন্দা অর্চনা নন্দী বলেন, ‘‘আগে সাইকেলে স্কুলে যেতাম। রাস্তা বেহাল হওয়ায় সাইকেলে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন হেঁটেই স্কুলে যাচ্ছি।’’

প্রশাসন সুত্রের খবর, অহল্যাবাই রাস্তাটি জেলা পরিষদের এক্তিয়ারভুক্ত। ওই রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে জেলা পরিষদের। তবে কাজ শুরুতে দেরি হওয়ায় পূর্ত দফতর রাস্তার বেহাল অংশগুলি সংস্কার করেছিল। টানা বৃষ্টিতে রাস্তা আবার বেহাল হয়ে পড়েছে। মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) বিবেক পঙ্কজ বলেন, ‘‘বেহাল অংশগুলি চিহ্নিত করেমেরামত করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy