মন্দিরনগরীর ঐতিহ্যমণ্ডিত লাল মোরামের টিলা কেটে সাফ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছিলই। ছিল নিচু জায়গা ভরাট করারও অভিযোগ। এতদিন এ নিয়ে সাধারণ মানুষ অভিযোগ তুলে আসছিলেন। এ বার ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতি মিছিল থেকে বিষ্ণুপুরে ‘বালি ও জমি মাফিয়ারা দূর হটো’ বলে স্লোগান উঠল।
শনিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই মিছিল শহর পরিক্রমা করে। চকবাজার থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল শহর পরিক্রমা করে। বিষ্ণুপুরে বালি ও জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাইকে স্লোগান উঠে ‘বালি ও জমি মাফিয়ারা দূর হটো’। দলের শহিদ স্মরণে কলকাতা যাওয়ার আহ্বান মিছিলে এমন স্লোগান কেন? বুদ্ধবাবু বলেন, ‘‘বালি ও জমি নিয়ে এখানে সিন্ডিকেটরাজ কায়েম হয়েছে। দলেরই একাংশ মদত দেওয়ায় শহরের উন্নয়ন স্তব্ধ। আমাদের নেত্রী রাজ্যের সর্বত্র সেই সিন্ডিকেট ভাঙার ডাক দিয়েছেন। সেই কারণেই মিছিল থেকে নেত্রীর কথা তুলে ধরলাম আমরা।’’ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মোটরবাইক চালকদের হেলমেট পরার উপরে জোর দিয়েছেন। সেই বিষয়েও তৃণমূলের এই মিছিলে প্ল্যাকার্ড চোখে পড়ে। এমনকী হেলমেট বিহীন মোটরবাইক চালকদের থামিয়ে গোলাপ ফুল ধরিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, আইন আর যেন না ভাঙেন।
রঘুনাথপুরেও তৃণমূল কর্মীরা হেলমেট পরে র্যালি করলেন।
মিছিলে বুদ্ধবাবুর সঙ্গে ছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মথুর কাপড়ি, কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা কুণ্ডু এবং প্রাক্তন কাউন্সিলর শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় (বাপি), সুশান্ত মুখোপাধ্যায়, দেবজিৎ কুণ্ডু ও যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সিংহ প্রমুখ। তবে শহরের পুরপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বা তাঁর অনুগামীদের দলের এই মিছিলে দেখা যায়নি। তাঁরা অবশ্য আগেই কয়েকদিন ২১ জুলাইয়ের মিছিল করেছিলেন।
সম্প্রতি উপপুরপ্রধানের পদ থেকে বুদ্ধদেববাবুকে সরিয়ে দিয়েছেন শ্যামাপ্রসাদবাবু। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, বিধানসভা ভোটে দলের প্রচারে বুদ্ধবাবু ছিলেন না। ওই ভোটে শ্যামবাবু বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছেন। তারপরেই তাঁরা দলের সমাবেশের প্রস্তুতি মিছিল করেছিলেন। রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহালদের মতে, এ দিন বুদ্ধবাবুর মিছিল সে দিনের মিছিলেরই পাল্টা।
—নিজস্ব চিত্র