E-Paper

রেডিমেডের দাপট, ইদে হতাশ দর্জিরা

দর্জিরা জানাচ্ছেন, এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে। রেডিমেড পোশাকে বাজার ছেয়ে গিয়েছে।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৮:৪৮
ইদের নতুন জামা তৈরি। তবে, আগের তুলনায় ব্যস্ততা কম।

ইদের নতুন জামা তৈরি। তবে, আগের তুলনায় ব্যস্ততা কম। নিজস্ব চিত্র।

দোরগোড়ায় ইদ। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সকলেই। বাজারে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাট। ফল, মিষ্টি, জামা-কাপড় ও প্রসাধনের দোকানগুলিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে। তারই মাঝে খানিকটা ম্রিয়মাণ সিউড়ি শহরের দর্জিরা। বাজার চলতি রেডিমেড পোশাক এবং শপিং মলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছেন তাঁরা। ফলে ইদের মরসুমেও হাত ফাঁকা অনেকেরই।

আজ থেকে কয়েক বছর আগেও ছবিটা এ রকম ছিল না। ইদ উপলক্ষে দর্জির দোকানে উপচে পড়ত ভিড়। উৎসবের ১৫-২০ দিন আগেই নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিতেন দর্জিরা। দোকানের বাইরে বোর্ড লাগানো থাকত, ‘অর্ডার নেওয়া বন্ধ’। অতিরিক্ত কর্মী লাগিয়ে কিংবা অতিরিক্ত সময় কাজ করে কোনও রকমে কাজ শেষ করতে হত। এমনও পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, ইদের দিনে উৎসবে শামিল হওয়ার আগে বকেয়া কাজ শেষ করতে হয়েছে তাঁদের৷

দর্জিরা জানাচ্ছেন, এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে। রেডিমেড পোশাকে বাজার ছেয়ে গিয়েছে। বর্তমান যুবসমাজ রেডিমেট পোশাকেই স্বচ্ছন্দ বেশি। ইদে বানিয়ে পোশাক পরার যে পরম্পরা ছিল, সেটাও এখন আগের থেকে কমে এসেছে। এখন যে পরিমাণ কাজ রয়েছে, সেখানেও নতুন পোশাক তৈরির তুলনায় রেডিমেড পোশাক ফিটিংসের কাজই বেশি। এই অবস্থায় শহরের একাধিক দর্জি পরিবারের নতুন প্রজন্ম পেশা বদলের কথাও ভাবছেন। দীর্ঘদিন ধরে সিউড়িতে দর্জির কাজ করছেন শেখ দিলখুশ। তিনি বলেন, “ইদে আর দুর্গাপুজোয় জামাকাপড়ের কাজের উপরেই সারা বছরের রোজগারের বেশির ভাগ নির্ভর করে। কিন্তু, কাজ এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। আগে ইদের সময় যদি ১০০টি কাজ থাকত, এখন সেই সংখ্যা ৫০-৬০টিতে নেমে এসেছে। এখনকার ছেলেমেয়েরা পোশাক বানিয়ে পরার তুলনায় তৈরি করা পোশাক পরতেই বেশি স্বচ্ছন্দ।”

তবে, এখনও কিছু মানুষ এই পরম্পরা বজায় রেখেছেন। যেমন সিউড়ির বাসিন্দা নিলোফার ইয়াসমিন। তাঁর কথায়, “আমরা ছোটবেলা থেকেই ইদের আগে পছন্দ মতো কাপড় কিনে তৈরি করা সালোয়ার-কামিজ পরতে অভ্যস্ত ছিলাম। সেই ধারা আজও বজায় আছে। এখনকার প্রজন্ম ঠিক কী ভাবে, বলতে পারব না। কিন্তু একটা পোশাক আমার জন্য, আমার মাপেই তৈরি হচ্ছে, আর সেই পোশাক উৎসবের দিনে শুধু আমার গায়েই থাকবে, এটার মধ্যে অন্য রকম মজা আছে বইকি!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy