Advertisement
E-Paper

কর্মী নিয়োগের গোড়াতেই শুরু বিতর্ক

পুরসভার কিছু পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াকে ঘিরে রঘুনাথপুরে জলঘোলা শুরু হয়েছে। এতদিন ধরে ওই পদে কাজ করে যাওয়া অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি তুলেছে এসইউসিআই প্রভাবিত মিউনিসিপাল ওয়াকার্স ইউনিয়ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৩

পুরসভার কিছু পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াকে ঘিরে রঘুনাথপুরে জলঘোলা শুরু হয়েছে। এতদিন ধরে ওই পদে কাজ করে যাওয়া অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি তুলেছে এসইউসিআই প্রভাবিত মিউনিসিপাল ওয়াকার্স ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার পুরভবনে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠকে কাউন্সিলরদের একাংশও ওই অস্থায়ী কর্মীদের কাজের নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তৃণমূলের পুরপ্রধান মদন বরাট অবশ্য বলছেন, “এই পদগুলিতে যারা অস্থায়ী ভাবে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছেন সরকার নির্ধারিত যোগ্যতা থাকলে তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন।” তবে ওই কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন কি না তাঁর কাছে সদুত্তর মেলেনি।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভায় বহু শূন্যপদ রয়েছে। মূলত অস্থায়ী ভাবে কর্মী নিয়োগ করেই পুরসভা কাজ চালাচ্ছে। তাঁদের মজুরি বা ভাতা দেয় পুরসভা। সম্প্রতি রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এই পুরসভার বিভিন্ন দফতরে ১৪টি স্থায়ী পদ মঞ্জুর করে নিয়োগ করতে বলেছে। তাঁদের বেতনও দেবে রাজ্য সরকার। ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন পুর পরিষেবার উন্নয়ন ঘটবে, তেমনিই আর্থিক ব্যয়ভার কমবে পুরসভার। তারই প্রেক্ষিতে পদগুলির মঞ্জুরি মেলার পরেই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরীপ্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ অক্টোবর আবেদন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

পুজোর পরে পুরসভার কাজ পুরোদমে শুরু হওয়ার পরেই এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। মিউনিলিপাল ওয়াকার্স ইউনিয়ন এ দিন পুরপ্রধানের কাছে ওই বিষয়ে স্মারকলিপি দেয়। এই সংগঠনটি মূলত দু’টি অভিযোগ করেছে। প্রথমত, তিন বছর আগে রাজ্য সরকার পুরসভার যে সব অস্থায়ী কর্মী ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কাজ করছেন, তাঁদের মজুরি বাড়িয়ে মাসিক ৬,৬০০ টাকা করার নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিন্তু রঘুনাথপুরের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ এখনও কার্যকর করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, পুরসভা নতুন স্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার ফলে ওই পদগুলিতে যারা দীর্ঘদিন অস্থায়ী ভাবে কাজ করছেন, তাঁদের কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংগঠনের নেতা লক্ষ্মীনারায়ণ সিংহ, প্রবীর মাহাতোরা বলেন, “অস্থায়ী কর্মীদের নূন্যতম মজুরি বাড়িয়ে মাসিক ৬,৬০০টাকা করার সরকারি নির্দেশিকা কার্যকরী করার জন্য বহুবার পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকরী হয়নি। অথচ এরই মধ্যে কিছু পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুরসভা। ফলে এতদিন ধরে যারা ওই পদগুলিতে সামান্য বেতনে কাজ করেছে তাঁদের কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।” ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের প্রথম অভিযোগটির প্রসঙ্গে পুরপ্রধানের দাবি, “ইতিমধ্যেই ৩৬ জনের নামের তালিকা তৈরি করে পুর ও নগরন্নয়ন দফতরে পাঠানোর পাশাপাশি পুরমন্ত্রীর সাথে নিজে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু মজুরি বাড়ানোর নির্দেশ মেলেনি।”.

ঘটনা হল এই ১৪টি পদে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন তাঁদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি উঠেছে পুরসভায় তৃণমূলেরই অন্দরেই। এ দিনের বৈঠকে ওই দাবি করেছেন পুরসভার তৃণমূলের দলনেতা বিষ্ণুচরণ মেহেতা। তিনি বলেন, “সরকারি নির্দেশে আবেদন করার বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা ও বয়স ওই পদগুলিতে অস্থায়ী হিসাবে দীর্ঘদিন কর্মরত কর্মীদের অনেকেরই নেই। সে ক্ষেত্রে নতুন কর্মী নিয়োগ করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে নূন্যতম বেতনে এই পদে যাঁরা কাজ সামলেছেন, তাঁদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা পুরসভার নৈতিক কর্তব্য।” পুরসভার কংগ্রেসের কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী বলেনস “এ দিনের সভায় আমরা দাবি করেছি, নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে পুরনো কর্মীদের। এবং কোনও ক্ষেত্রেই পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করা চলবে না।” এক ধাপ এগিয়ে নিয়োগ কমিটিতে পুরসভার পাশাপাশি বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের নেওয়ার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। তবে পদগুলিতে কাজ করা পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান।

raghunathpur municipality employee recruitment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy