Advertisement
E-Paper

পুলিশের মারধরে অসুস্থ বিজেপি কর্মী

হামলায় অভিযুক্ত এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে লকআপের মধ্যে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। বিজেপি’র অভিযোগ, ওই কর্মীকে এমন মারধর করেছে পুলিশ, যে তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করতে হয়েছে। পুলিশ অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি লকআপের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৫

হামলায় অভিযুক্ত এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে লকআপের মধ্যে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। বিজেপি’র অভিযোগ, ওই কর্মীকে এমন মারধর করেছে পুলিশ, যে তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করতে হয়েছে। পুলিশ অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি লকআপের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার ঘটনা।

এ দিকে, পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের মন্তব্য, এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও থানায় ঢুকে পুলিশ পেটানো ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষকে ছুঁতে পর্যন্ত পারছে না পুলিশ। অথচ বিজেপি করার অপরাধে দলীয় এক কর্মীকে নৃশংস ভাবে মারধর করা হল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বোলপুর থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ইলামবাজার থানার ডোমনপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী শেখ জিয়ারুল ওরফে লালবাবু। ওই থানার গোলটি মোড় থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুর দেড়টা নাগাদ ইলামবাজার থানার পুলিশ বাড়িতে পেশায় বালি ব্যবসায়ী বিজেপি কর্মী শেখ জিয়ারুলের গ্রেফতারির খবর জানিয়ে দেয়। খবর পেয়ে তাঁর বাড়ির লোকজন থানায় যান। তাঁদের অভিযোগ, গ্রেফতারের পর থেকে ইলামবাজার থানার ওসি এবং ওই থানার অন্য পুলিশ কর্মীরা তাঁকে লকআপে ঢুকিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।

হাসপাতালে পুলিশ সেলে চিকিত্‌সাধীন শেখ জিয়ারুলের অভিযোগ, “বালির টাকা নিয়ে বোলপুর থেকে ফিরছিলাম। পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তার পরে লকআপের মধ্যে ইলামবাজার থানার ওসি মহম্মদ আলি এবং কয়েক জন পুলিশ আমাকে একটা করে প্রশ্ন করছে আর মারধর করছে। একটা সময় মাটিতে ফেলেও মারতে থাকেন তাঁরা। ওঁদের হাতেপায়ে ধরি। কিন্তু ওঁরা কোনও কথা না শুনে শুধু মারতে থাকেন। মারে আমি জ্ঞান হারাই।” হাসপাতাল সুপার অমিত মজুমদার বলেন, “সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষা হয়েছে।” কীসের অসুস্থতা এবং শরীরে কোনও আঘাত রয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে সুপার বলেন, “এটি পুলিশের বিষয়। এর বেশি মন্তব্য করব না।”

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইলামবাজার থানার ডোমনপুর গ্রামে এক বিজেপি কর্মী শেখ এনামুল গুলিবিদ্ধ হন। ওই খুনের ঘটনার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিহতের দেহ তুলে ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ এলাকায় যায়। তখন পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে শেখ জিয়ারুলের বিরুদ্ধে। জিয়ারুলের ভাই মতিউল রহমানের দাবি, “দাদা বালির টাকা নিয়ে বোলপুর থেকে ফিরছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ তাঁকে ধরেছে। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে দুপুরেই ইলামবাজার থানায় যাই। আমরা থানার বাইরে অপেক্ষা করতে থাকি। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় পুলিশ থানার পিছনের গেট দিয়ে দাদাকে বোলপুর হাসপাতলে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতলে দাদাকে দেখতে এসেছি।”

এ দিন হাসপাতলে ইলামবাজার থানার ওসি মহম্মদ আলি, পাড়ুই থানার ওসি অমরজিত্‌ বিশ্বাস এবং বোলপুরের সিআই চন্দ্রশেখর দাস অত্যন্ত তত্‌পরতার সঙ্গে হাসপাতলে ভর্তি করেন। কড়া পুলিশি পাহারায় তাঁকে রাখা হয়েছে। বিজেপি’র ইলামবাজার ব্লক পর্যবেক্ষক চিত্তরঞ্জন সিংহের অভিযোগ, “আমাদের একাধিক কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা তৃণমূলের বলে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ আমাদের কর্মীকে পুলিশ ধরে বেধড়ক মেরেছে। তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে তা তদন্তের বিষয়। কিন্তু এই ভাবে মারবে কেন?” বোলপুরের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” পরিবার এবং বিজেপি’র অভিযোগ প্রসঙ্গে এসডিপিও বলেন, “অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

থানায় ঢুকে পুলিশ পেটানোয় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা এলাকায় সভা সমিতি করছে। অথচ পুলিশ তাকে ধরছে না কেন? এসডিপিও বলেন, “আমরা তাঁকে খুঁজছি। পেলে গ্রেফতার করব।” জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য ফোন ধরেননি। এসএমএস-এর কোনও জবাব দেননি।

ilambazar bjp police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy