তদন্তকেন্দ্র থেকে থানায় উন্নীত হওয়ার পরেও অপরাধ কমছে না আদ্রায়। এক মাসের মধ্যে রেলশহরে তিনটি চুরি ও একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটনায় অভিযোগ উঠছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার। বুধবার রাতে আদ্রার মিশন পাড়ায় অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর বাড়ির ছাদের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে লুঠপাঠ চালায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার আগে পরপর চুরি হয়েছে ফাঁকা ঘরের দরজা ভেঙে। অন্য ঘটানাগুলির মতো এক্ষেত্রেও কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার করা হয়নি চুরি যাওয়া জিনিসপত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্টের গোড়ায় প্রথম চুরির ঘটনাটি ঘটে আদ্রার অরবিন্দ পল্লিতে, রেলকর্মী সমীর বসুর বাড়িতে। এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের সন্ধান পায়নি পুলিশ। দিনের বেলায় ফাঁকা বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে আলমারি ভেঙ্গে নগদ টাকা,অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দিয়েছিল চোরের দল। তার পরে একই কায়দায় চুরি হয়েছে থানার অদূরে রেলকর্মী গুলাব প্রসাদের আবাসনে ও নিউকলোনিতে। এ বার মিশন পল্লিতে রেলকর্মী গর্ডন লুইসের বাড়িতে হল ডাকাতি! গর্ডনের ছেলে ডেজু লুইস জানান, রাত দুটো-আড়াইটে নাগাদ কয়েক জন এসে বাইরে থেকে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বলেছিল। পরে একতলা বাড়ির ছাদে উঠে ছাদের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ডেজু বলেন, “দুষ্কৃতী সংখ্যায় ৮-১০ জন ছিল। ওরা সশস্ত্র অবস্থায় মুখে গামছা বেঁধে ঘরে ঢোকে। আলমারি খুলে নগদ টাকা ও অলঙ্কার নিয়ে নেয়। বাধা দিতে গেলে লাঠি দিয়ে মারধর করে আমাকে।” লুঠপাট চলাকালীন কোনও মতে ঘটনার খবর মোবাইলের মাধ্যমে এক আত্মীয়কে জানাতে পেরেছিলেন তাঁরা। লোকজন নিয়ে সেই আত্মীয় মিশন পাড়ায় আসা মাত্রই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে তদন্তে যান রঘুনাথপুরের এসডিপিও।
পরপর অপরাধের ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত রেলশহরের বাসিন্দারা। বিশেষ করে ঘরে কেউ না থাকলেই ফাঁকা ঘরের দরজা ভেঙে যেভাবে পরপর চুরির ঘটনা ঘটেছে, তাতে চিন্তায় পুলিশও। উৎসবের মরসুম শুরু হওয়ার আগে পুলিশের মাথাব্যথা আরও বেড়েছে। রেলকর্মী সংগঠন মেন্স কংগ্রেসের একটি শাখা অফিসের পাশেই চুরি হয়েছিল গুলাব প্রসাদের বাড়িতে। সংগঠনটির নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আদ্রা থানা হওয়ার পরে ভেবেছিলাম অপরাধ কমবে। কিন্তু, কার্যত উল্টো হচ্ছে! যেভাবে পরপর চুরি, ডাকাতি হচ্ছে, তাতে আমরা যথেষ্টই আশঙ্কায়।”
তবে বুধবার রাতের ঘটনাগুলির আগের চুরির ঘটনাকে এক করে দেখতে রাজি নন পুলিশকর্তারা। এসডিপিও পিনাকী দত্ত বলেন, “তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, বুধবার রাতের ঘটনায় ওই এলাকারই এক ব্যক্তিকে খুঁজতে গিয়ে ভুল বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার পরে ওই বাড়িতেই লুঠপাঠ করেছে। আর আগের চুরিগুলো হয়েছে ফাঁকা বাড়ির সুযোগে। তবে, আমরা তদন্ত শুরু করেছি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে।” পুলিশের আশ্বাস, আসন্ন উৎসবের মরসুমে অপরাধের ঘটনা বাড়ার প্রবণতাকে মাথায় রেখে আদ্রায় কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy