বড় ও উল্লেখযোগ্য শিল্পের জন্য জমি-সমস্যা কি আদৌ কাটবে? লৌহ এবং ইস্পাত সংক্রান্ত পণ্য উৎপাদন শিল্পের জন্য কয়েকটি সংস্থাকে সব মিলিয়ে ২২১৫ একর জমি দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পরে এই চর্চাই শুরু হয়েছে।
সরকারি সূত্রের দাবি, বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এক-একটি সংস্থা কম-বেশি দেড়শো একর করে জমি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুরোদস্তুর ইস্পাত কারখানার তুলনায় এই জমির পরিমাণ কম। তাই এই পদক্ষেপ বড় শিল্পে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের খরা কাটাতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে পর্যবেক্ষক মহলে।
যদিও প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যের এখনকার জমি নীতির আওতায় জমি-ব্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে। যেখানে পছন্দ মতো জমি বেছে নিতে পারেন বিনিয়োগকারী। সমান্তরালে প্রথাগত লিজ়ের বদলে ‘ফ্রি-হোল্ড’ (মালিকানাসত্ত্ব) দেওয়ার নীতি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে জমি দেওয়ার আগে তাদের ক্ষমতা-দক্ষতার যাচাই হয়েছিল। পাশাপাশি, জমি দেওয়ার সিদ্ধান্তের থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের শিল্প গড়ে ফেলতে হবে সরকারি শর্ত মেনে। পূর্ব নির্ধারিত সরকারি দর দিয়েই সেই জমি কিনতে হয়েছে সংস্থাগুলিকে। এক কর্তার কথায়, “যেখানে যত সরকারি জমি রয়েছে, তা শিল্পের কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্যে এমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জমি একত্র করে শিল্পতালুকের আওতায় আনার কাজও হচ্ছে। তাতে বাইরে থেকে জমি কেনার ঝক্কিও সামলাতে হচ্ছে না ক্রেতাকে।”
পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত কারখানার জন্য ৯৯৭ একর জমি দরকার ছিল। গাড়ি উৎপাদন কারখানার নিরিখে অন্যান্য জায়গার তুলনায় তা ছিল কম। তবু সেই বিনিয়োগ বাস্তবায়িত না হওয়ার নেপথ্যে জমিই ছিল অন্যতম কারণ। সেই ঘটনার পর থেকে তেমন বড় মাপের বিনিয়োগ আসেনি। যদিও নবান্নের অন্দরের যুক্তি, গত আটটি দফায় ‘বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলন’ থেকে আসা যে পরিমাণ বিনিয়োগ প্রস্তাব কার্যকর হয়েছে, তাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এবং সরকারের দেওয়া জমির উপরেই তথ্যপ্রযুক্তিতে ইনফোসিস, রিলায়্যান্স, আইটিসি-সহ একাধিক সংস্থা এ রাজ্যে কাজ শুরু করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)