E-Paper

পশ্চিম মেদিনীপুরে বাড়ছে সঙ্ঘ, উৎসাহী বিজেপিও

গত কয়েক বছরে জেলার আদিবাসী প্রধান এলাকা এবং পুরনো জনপদগুলিতে শাখা বেড়েছে সঙ্ঘের। বেড়েছে স্বয়ংসেবকের সংখ্যাও।

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:২২
Picture of RSS Chief Mohan Bhagwat.

মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতি সঙ্ঘের যে আলাদা নজর রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছিল গত বছর মে মাসে। সেই সময়ে এই জেলার কেশিয়াড়িতে এসে থেকেছিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এখন দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরে জেলার আদিবাসী প্রধান এলাকা এবং পুরনো জনপদগুলিতে শাখা বেড়েছে সঙ্ঘের। বেড়েছে স্বয়ংসেবকের সংখ্যাও। যা দেখে উৎসাহী বিজেপির জেলা নেতৃত্বও।

আরএসএসের দ্বিতীয় বর্ষ সঙ্ঘ শিক্ষাবর্গে (প্রশিক্ষণ শিবির) গত বছর মে মাসে কেশিয়াড়িতে এসেছিলেন মোহন ভাগবত। তাঁর সেই সফর নিয়ে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কেশিয়াড়ি থানার আইসি উদয়শঙ্কর মণ্ডল ও বিধায়ক পরেশ মুর্মুকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না এই সফর। এখন পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে বহরে বাড়ছে সঙ্ঘ। আরএসএসের শাখা সংগঠন ‘নিত্য’র শাখা বেড়েছে জেলায়। বেড়েছে প্রশিক্ষিত স্বয়ংসেবকের সংখ্যাও। তিন বছরে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে বলে খবর। বেড়েছে সঙ্ঘ থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার পাঠকের সংখ্যাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাক্তন স্বয়ংসেবক (এখন বিজেপিতে সক্রিয়) বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে ২৭টি শাখা সংগঠন কাজ করছে। মেদিনীপুরে আগে ছিল ১৩টি শাখা সংগঠন, এখন বেড়ে হয়েছে ১৭টি।’’ শাখা সংগঠনগুলি জেলার প্রতিটি মহকুমাতেই কাজ করছে।

সঙ্ঘ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথাও ৮-১০ তো কোথাও ৩০-৩৫ জনকে নিয়ে বসে শাখা। লক্ষ্য মূলত যুব সম্প্রদায়কে কাঠে টানা। এক দিকে ঘাটাল, গড়বেতার মতো পুরনো জনপদ, অন্য দিকে আদিবাসী এলাকা, বিশেষ করে ধর্মান্তরিত অনগ্রসর সম্প্রদায়ের কাছেও সঙ্ঘের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি। জেলার এক সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বলেন, ‘‘করোনা অতিমারি পর্বে স্বয়ংসেবক পরিচালিত শাখাগুলি প্রচুর সেবামূলক কাজ করেছে। এতে অসহায় মানুষের মধ্যে সাড়াও পড়েছে।’’ পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রশিক্ষিত স্বয়ংসেবকের সংখ্যাও। সূত্রের খবর, প্রতি বছর এখান থেকে ২০০-২৫০ জন স্বয়ংসেবক প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন রাজ্যের তিনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। গ্রাম বিকাশ যোজনার কাজ দ্বিগুণ বেড়েছে। গত বছর কেশিয়াড়িতে সঙ্ঘ প্রধানের উপস্থিতিতে এই গ্রাম বিকাশ যোজনার কাজ নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। তার পর থেকেই এই কাজে বাড়তি উৎসাহ এসেছে বলে সঙ্ঘের দাবি।

মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়ে গেলেও তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘আরএসএস তাদের মতো কাজ করতে পারে। তবে তারা বিজেপির মতো বড়লোকদের দলকে সাহায্য করলে তাদের অবক্ষয় হতে বাধ্য।’’ মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র দিলীপ ঘোষ সঙ্ঘ ঘুরে এখন বিজেপিতে। বর্তমানে মেদিনীপুরের সাংসদ তিনি। লোকসভা ভোটের আগে সঙ্ঘের শ্রীবৃদ্ধিতে খুশি গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শঙ্করকুমার গুছাইত বলছেন, ‘‘আরএসএস ভারতবর্ষের কৃষ্টি-সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরেও এই কাজ দেশের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা-ভক্তি বাড়াবে। দেশের জন্য কাকে দরকার, সেটা চেনা সহজ হবে।’’ সঙ্ঘের এই বাড়বৃদ্ধিকে তাই রাজনীতি থেকে আলাদা করছেন না স্থানীয় লোকজনেরা। তাঁদের কথায়, বাকিটা সময়ই বলবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RSS BJP Mohan Bhagwat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy