Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Sitaram Yechury

‘সংখ্যা’র জেদ চান না সীতা, অধীরও

তাঁর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘একেবারে বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দিয়েছেন ইয়েচুরি।

সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।

সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০০:০৫
Share: Save:

বিহারের ভোটে মহাজোটের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে বাংলা-সহ অন্য রাজ্যে আসন-রফা ‘বাস্তবসম্মত’ পদ্ধতিতে করার জন্য আবেদন জানাচ্ছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর যুক্তি, শুধু কত আসনে লড়া হবে, সেই সংখ্যার বদলে জোর দেওয়া হোক এলাকাভিত্তিক পরিস্থিতির উপরে। ইয়েচুরির এই মতকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ করার কথা জানাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।

সদ্যসমাপ্ত বিহারের বিধানসভা ভোটে মহাজোটের শরিক হয়ে কংগ্রেস লড়েছিল ৭০টি আসনে। তার মধ্যে তারা জিতেছে ১৯টিতে। বামেরা ২৯টিতে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৬টিতে জয়ী হয়েছে। তার পরেই আসন জয়ে সাফল্যের হার (স্ট্রাইক রেট) নিয়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, ‘‘বিহারে বামেদের যা সাফল্যের হার, তাতে আরও কিছু আসনে তারা লড়তে পারলে মহাজোট ক্ষমতায় এসে যেত। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, বামেরা যে আসনে জয়ী হয়েছে, তার মধ্যে কিন্তু জোটের ভোটও আছে।’’ কয়েক মাসের মধ্যে বাংলা, তামিলনাড়ু, অসমের মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোট আসন্ন। এই সব রাজ্যেই কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে জোট গড়ে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং আমাদের সহযোগী সব দলের কাছে আবেদন করব, আসন ভাগের পাইকারি সংখ্যা নিয়ে শুধু বিতর্ক করে লাভ নেই। বরং, কেন্দ্র ধরে ধরে বিচার করা হোক, কোথায় কার কেমন শক্তি। যেখানে যার জেতার সম্ভাবনা বেশি, সেই দলকেই সেখানে লড়তে দেওয়া হোক। সংখ্যা নয়, বাস্তবের মাটির পরিস্থিতিই হোক আসন ভাগের ভিত্তি।’’

তাঁর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘একেবারে বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দিয়েছেন ইয়েচুরি। তাঁর সঙ্গে আমি পূর্ণ সহমত। কে কত আসন লড়বে, তা নিয়ে কোনও পক্ষেরই গোঁয়ার্তুমি করা উচিত নয়!’’ রাজ্য স্তরে আনুষ্ঠানিক ভাবে তেমন বড় কিছু না হলেও জেলা ও ব্লক স্তরে বাম ও কংগ্রেসের যৌথ কর্মসূচি জারি আছে বলেও অধীরবাবু জানাচ্ছেন।

পূর্বাঞ্চলে বিহারের ভোটের পরে বিজেপিরও মূল নজর এখন বাংলায়। সে কথা মাথায় রেখেই ইয়েচুরি বলছেন, ‘‘বাংলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে বাংলাকে তুলে দেওয়া যায় না। ভোটের বিভাজন আটকাতে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই বাস্তবসম্মত ভাবে আসন-রফা করতে হবে। কত আসন ছাড়বেন বলুন— এই দাবি আঁকড়ে থাকলে চলবে না!’’ একই সঙ্গে ইয়েচুরি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিজেপির হাতে দেশ ও রাজ্যের অবশ্যই বড় বিপদ। কিন্তু বাংলায় তৃণমূলের প্রতি ‘নরম’ হতে গেলে তৃণমূল-বিরোধী সব ভোট বিজেপির ঘরে জমা হবে এবং তাতে আখেরে বিজেপিরই ফায়দা হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE