Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Sukanya Mondal

তিহাড়ে কেষ্টকে ‘নির্যাতন’, বাড়িতে জিনিসপত্র ভাঙচুরের পর সুকন্যার ক্ষোভ, বাবার সঙ্গীরা এখন দূরে কেন?

প্রকাশ্যে এই ঘটনার কথা অস্বীকার করলেও জেলা তৃণমূলের অন্দরে এ নিয়ে আলোড়ন পড়েছে বলে সূত্রের দাবি। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই সুকন্যার ক্ষোভকে সমর্থন করছেন।

Anubrata Mondal and Sukanya Mondal.

অনুব্রত মণ্ডল এবং সুকন্যা মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪০
Share: Save:

ক্ষোভ জমছিল একটু একটু করে। শুক্রবার রাতে সেটাই যেন ফেটে পড়ল বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলা নেতাদের বাড়িতে ডেকে অনুব্রতের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা। তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী অবশ্য বলছেন, “এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে দল সুকন্যার পাশে আছে। ব্যক্তিগত ভাবেও যেটুকু থাকা দরকার, আমরা আছি।”

দলের বিশেষ সূত্রে দাবি, শুক্রবার সন্ধ্যায় বোলপুরের নিচুপট্টির পৈতৃক বাড়িতে ফেরেন সুকন্যা। সূত্রের দাবি, তিহাড় জেলে তাঁর বাবাকে নানা ভাবে ‘হেনস্থা’ ও ‘নির্যাতন’ করা হচ্ছে বলে শুনে তিনি ব্যাপক ক্ষিপ্ত হন, জিনিসপত্র ভাঙচুর অবধি করেন। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা খবর দেন তৃণমূলের কার্যালয়ে। তখন রাত ১০টা পেরিয়েছে। সূত্রের দাবি, তখন কেষ্টর বাড়িতে আসেন কোর কমিটির সদস্য তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সুদীপ্ত ঘোষ, বোলপুরে পুরপ্রধান ওমর শেখ, শহর সভাপতি নরেশ বাউরি-সহ বহু নেতা। বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, তাঁদের সামনে কেষ্ট-কন্যা কার্যত ভেঙে পড়ে বলতে থাকেন, বাবা যখন ছিলেন, তখন তাঁর পাশে সবাই ছিলেন। সূত্রের দাবি, যখন অনুব্রত জেলে, তাঁদের দুঃসময় চলছে, তখন সবাই তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, সে কথাও বলেন তিনি। সূত্রের দাবি, সুকন্যা বলে ওঠেন, ‘‘এ জিনিস চলতে পারে না।” সূত্রের খবর, তাঁকে আশ্বস্ত করেন তৃণমূল নেতারা।

প্রকাশ্যে এই ঘটনার কথা অস্বীকার করলেও জেলা তৃণমূলের অন্দরে এ নিয়ে আলোড়ন পড়েছে বলে সূত্রের দাবি। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই সুকন্যার ক্ষোভকে সমর্থন করছেন। তাঁদের দাবি, যাঁরা এক সময় অনুব্রতের ‘ছায়াসঙ্গী ছিলেন’, গ্রেফতারির পরে তাঁরাই ‘কেষ্টদার’ সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন। অনেকেই বহু দিন নিচুপট্টির বাড়িমুখো হননি বলে দাবি। সম্প্রতি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুকন্যার দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন জেলা কোর কমিটিকে। তার পরেও কেউ বিশেষ উদ্যোগী হননি বলে সূত্রের দাবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “কেষ্টদা জেলে যেতেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে অনেকে দূরত্ব তৈরি করেছেন।’’

ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই মহম্মদবাজারে দলের একটি কর্মসূচিতে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সবাই অমৃতটাই দেখছেন। কিন্তু আজ যিনি গরল পান করতে পারতেন, রাজনীতির প্যাঁচ-পয়জারে তাঁকেই দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।” এ দিন তার ব্যাখ্যা দিয়ে মলয় বলেন, ‘‘আমি অমৃত পানের প্রসঙ্গ তুলেছি আমাদের মতো তৃণমূলের নেতাদের ক্ষেত্রে। গরল বলতে বোঝাতে চেয়েছি, কঠিন সময় যে ভাবে লড়াই করে অনুব্রত জেলা তৃণমূলকে এই জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন।’’

আর অনুব্রতকে মনে রাখার বিষয়টি? মলয়ের জবাব, ‘‘কালীঘাটের বৈঠকে দিদি জেলা নেতাদের বলেছিলেন, তাঁরা যেন সুকন্যার খোঁজ খবর রাখেন। শুক্রবার রাতে নেতারা সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে কী হয়েছে, আমার জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sukanya Mondal Anubrata Mondal TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE