Advertisement
E-Paper

‘শাস্তির নির্দেশ রাজ্য পুরোপুরি কার্যকর করেনি’! কমিশন বলল হাই কোর্টে, সাসপেন্ড হওয়া ভোটকর্মী চান সিবিআই তদন্ত

নিজেকে এক জন ‘হুইসেলব্লোয়ার’ (ভিতরের দুর্নীতি যিনি ফাঁস করেছেন) বলে দাবি করে হাই কোর্টে নিলম্বিত ভোটকর্মীর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৯
Suspended government official of Kakdwip Sub-Division seeks CBI investigation before Calcutta High Court after several fake voters name was found

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর করেনি রাজ্য। ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে আদালত চাইলে রাজ্যের কাছে তথ্য তলব করুক। তাতে কোনও আপত্তি নেই। সাসপেন্ড হওয়া এক ভোটকর্মীর ভোটার তালিকায় কারচুপি সংক্রান্ত অভিযোগের মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে বুধবার রিপোর্ট দিয়ে এ কথা জানাল নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের আইনজীবী সৌম্য মজুমদারের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে চার আধিকারিককে দ্রুত সাসপেন্ড এবং তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য শুধু দু’জন অফিসারকে সাসপেন্ড করে। কোনও আধিকারিককের বিরুদ্ধে এফআইআর করেনি। এই অবস্থান নিয়ে রাজ্যের কাছে হাই কোর্ট তথ্য তলব করুক। সেই তথ্য এলে স্পষ্ট হবে কেন কমিশনের নির্দেশ মানা হয়নি। এফআইআর দায়ের না করার পিছনে আসল কারণ কী এবং ওই আধিকারিকদের ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ আড়াল করছেন কি না। এবং কার নির্দেশে হচ্ছে তা-ও জানা যাবে।

হাই কোর্টে কমিশনের আশ্বাস, ভবিষ্যতে কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে শুধু বিভাগীয় তদন্ত নয়, আইন মেনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে। কমিশন বুধবার আদালতে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর) প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। এই সংশোধনের মাধ্যমে অযোগ্যদের নাম বাদ যাবে এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে।

মামলাকারী অরুণ গড়াই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মহকুমায় অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় এবং পরে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এখন তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। অরুণের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ১) পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিধানসভা আসনে ভোটার তালিকা জালিয়াতি ও বেআইনির নথিভুক্তি হয়েছে। ২) বিদেশি নাগরিক এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষদেরও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

নিজেকে এক জন ‘হুইসিলব্লোয়ার’ (ভিতরের দুর্নীতি যিনি ফাঁস করেছেন) বলে দাবি করে হাই কোর্টে অরুণের অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। গ্রেফতার করতে চাইছে। তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চ অরুণের আবেদন মেনে রক্ষাকবচের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়েছে। সে দিন ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ অগস্ট অরুণ হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবদন করেছিলেন। আদালতকে তিনি জানান, কাকদ্বীপ এলাকার একটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়ো জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ভুয়ো জন্ম, মৃত্যু ও বাসিন্দা শংসাপত্রের ভিত্তিতে ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত, পরিবর্তন বা স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঘটনার সিবিআই তদন্তেরও আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।

এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিংহ এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে হেতু নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার সংশোধন প্রক্রিয়ার কাজ করছে, তাই এই রিট পিটিশনের শুনানি ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতুবি রাখা হল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হল—একটি হলফনামার মাধ্যমে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা আদালতে জমা দিতে হবে। মামলাকারীর অভিযোগগুলি নিয়েও হলফনামা দিতে হবে।’’ কমিশনের তরফে সেই হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগের নির্দেশে বলা হয়েছি, মামলাকারী অরুণকে তাঁর মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড, যা এফআইআর দায়েরের দিনে ব্যবহার করেছিলেন, হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার ওসি-কে ২৮ অগস্টের মধ্যে জমা দিতে হবে। অরুণকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রক্ষাকবচ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি জানিয়েছিলেন, ওই সময়সীমার মধ্যে অরুণকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ।

Election Commission Government Officials CBI Investigation Calcutta High Court Voter List Controversy Special Intensive Revision Voter List SIR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy