কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকায় পর পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সামনে রেখে তৈরি হওয়া বিতর্ক এ বার পৌঁছে গেল বিধানসভার অন্দরেও। বিধানসভায় বৃহস্পতিবার অধিবেশনের প্রথমার্ধের উল্লেখ-পর্বে সরব হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করলেন, পর পর অগ্নিকাণ্ডের পরেও পুরসভার কোনও হুঁশ নেই। পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (ববি) বললেন, সরকারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। জন-সচেতনতাও কমেছে।
খিদিরপুরের ঘটনার পরে এলাকায় আলাদা ভাবে গিয়ে শুভেন্দু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারেরা প্রত্যেকেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই সূত্র ধরেই শুভেন্দু এ দিন বিধানসভায় বলেছেন, “সাম্প্রতিক সময় কলকাতায় ১২টি অগ্নিকাণ্ডে দেড়শো জন মারা গিয়েছেন। তার পরেও সরকার, পুরসভার হুঁশ নেই! ধারাবাহিক নজরদারি, পরিকাঠামো, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এসওপি তৈরি হয়নি। রাজ্যে দমকলকেন্দ্র ১৩০টি, আর ইঞ্জিন ৩৫০টি। কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী দু’হাজার কেন্দ্র থাকতে হবে।” ফের ‘ষড়যন্ত্র’ তত্ত্বও উস্কে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, “নারকেলডাঙা থেকে খিদিরপুর, সব ভাল জমিতে প্রথমে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে কিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ, দাড়ি, বাঁশ, ত্রিপল দিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্তদের। এর পরে কিছু দিন জায়গাটা খালি থাকে। তার পরে প্রমোটিং হয়ে যাবে।” সরকার একশো কোটি টাকায় গজা, পেঁড়া বিলি করলেও, জনস্বার্থের কাজ কিছুই করেন বলেও অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু।
যদিও শুভেন্দুর বক্তব্যে আমল দেননি মন্ত্রী ফিরহাদ। তাঁর পাল্টা দাবি, “আগুন লাগার পরে সেই জায়গায় প্রমোটিং হয়েছে, এমন ঘটনা কলকাতা-সহ রাজ্যের কোথাও নেই। আগুনের পরে একটাও বড় নির্মাণ হয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত নেই। উল্টে পুনর্বাসন করতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “শুধু সরকারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। যথাযথ জয়গায় মানুষের সচেতনতা কমেছে।” দমকলকেন্দ্রের সংখ্যা নিয়ে বিরোধী দলনেতার দেওয়া তথ্য ঠিক নয় বলেও দাবি করেছেন বিভাগীয় মন্ত্রী সুজিত বসু।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)