ইলিশ-বিলাসী বাঙালির জন্য সুখবর। চলতি মরসুমে এই প্রথম ধরা পড়ল প্রচুর ইলিশ। গত তিন দিনে কাকদ্বীপ ও দিঘায় ধরা পড়া প্রায় সাতশো টন ইলিশ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। মেঘলা আকাশ, খাপছাড়া বৃষ্টিতে মন চনমন করে ওঠার মতো আরও খবর, নেহাত একরত্তি ইলিশ নয়। ৮০০-৯০০ গ্রামের মাঝারি সাইজের সেই ইলিশের দামও খুব শিগগির নামবে।
মরসুমে এই প্রথম এত ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি মৎস্যজীবীরাও। পশ্চিমবঙ্গ সংগঠিত মৎস্যজীবী সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, শনিবার কাকদ্বীপ-নামখানা-ফ্রেজারগঞ্জ থেকে ডায়মন্ড হারবার আড়তে ১০০ টনেরও বেশি ইলিশ এসেছে। তবে সে দিন দাম ছিল বেশ চড়া। পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৬০০ টাকা দরে। রবিবার ডায়মন্ড হারবার বাজারে ২০০ টনের বেশি মাছ আসে। তবে দামের বিশেষ হেরফের হয়নি। সোমবার মাছের জোগান আরও বাড়ে। তার ফলে এক ধাক্কায় দাম অনেকটাই কমেছে। এ দিন ৫০০-৭০০ গ্রাম ইলিশ ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে।
ওড়িশা উপকূলে একটি গভীর নিম্নচাপ ঘনীভূত হচ্ছে বলে আবহাওয়া দফতর সতর্কবার্তা জারি করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় সব ট্রলারই সোমবার রাতে বা মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে বন্দরে ভিড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘‘ওই সব ট্রলারে আরও ৩০০ টন ইলিশ আসার কথা।’’
সরকারি নিয়মে, ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়া বারণ। সাধারণত জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ইলিশ উঠতে শুরু করে। এ বছর সে সময় থেকেই আবহাওয়া বাদ সেধেছিল। সতর্কবার্তা উড়িয়ে সমুদ্রে যেতে গিয়ে তিনটি ট্রলারডুবি ঘটেছে। প্রায় ৪০ জন মৎস্যজীবীর প্রাণ গিয়েছে। সব মিলিয়ে মরসুমের প্রায় পঁচিশ দিন ট্রলার সমুদ্রে যেতে পারেনি। তবে গত কয়েক দিনে কাজ হয়েছে ভালই। বৃহস্পতিবার থেকে কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, দিঘা, শঙ্করপুর থেকে ট্রলার সমুদ্রে যেতে শুরু করে। শনিবার থেকে তারা ফিরছে। দিঘা মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘জোগান খারাপ নয়। রবিবার প্রায় দেড়শো টন ইলিশ উঠেছে। সোমবার এসেছে আরও বেশি। আবহাওয়া ঠিক থাকলে আগামী কয়েক দিনে প্রায় ৪০০ টন ইলিশ বন্দরে আসবে। দামও কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy