Advertisement
E-Paper

বোসের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে কোনও পক্ষই নেই রাজভবনে, সচেতন ভাবে দূরত্ব বজায় রাখল শাসক এবং বিরোধী দু’তরফই

২০২২ সালে ২৩ নভেম্বর রাজ্যের রাজ্যপাল পদে শপথ নিয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। সেই থেকে নানা বির্তকে জড়িয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ২০:২০
রবিবার রাজভবনে নিজের আগমনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালন করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

রবিবার রাজভবনে নিজের আগমনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালন করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ছবি: পিটিআই।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্বে আসার তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালন করলেন সিভি আনন্দ বোস। রবিবার সকাল থেকে দুপুর হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বোস তাঁর বর্ষপূর্তি উদ‌্‌যাপনে ব্যস্ত রইলেন। তবে তাঁর এমন বর্ষপূর্তিতে দূরত্ব বজায় রাখল শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই। ২০২২ সালে ২৩ নভেম্বর তিনি রাজ্যের রাজ্যপাল পদে শপথ নিয়েছিলেন। সেই থেকে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন বোস। ফলে সবপক্ষের সঙ্গেই অম্লমধুর সম্পর্ক তাঁর। যা ধরা পড়ল রবিবার তাঁর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের অনুপস্থিতিতে।

প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের উত্তরসূরি হিসাবে কলকাতার রাজভবনে এসেছিলেন বোস। বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা ছিল, যে ভাবে ধনখড় সময়ে অসময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতেন, সেই পথেই চলবেন বোস। কিন্তু নভেম্বর মাসে দায়িত্বে আসার পরের বছর ২৬ জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাংলা ভাষার হাতেখড়ি নেন বোস। যা ভাল চোখে দেখেননি রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপির নেতারা। সেই ঘটনার পর বিভিন্ন বিষয়ে রাজভবন গিয়ে বিজেপি নেতাদের নালিশ জানাতে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে। বিষয়টি বুঝতে পেরে রাজ্যপাল স্বয়ং এই দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলেও বিজেপি সূত্রে জানা যায়। কিন্তু তাতেও সম্পর্কের ‘বরফ’ গলেনি বলেই খবর।

আবার রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের সন্ত্রাসে আক্রান্তদের জন্য ‘পিস হাউস’ খুলে শাসকের রোষানলে পড়েন তিনি। এমনকি ভাঙড় ও ক্যানিংয়ের মতো জায়গায় সন্ত্রাস দেখতে গিয়েও শাসকদলের সমালোচনার মুখে পড়েন রাজ্যপাল। স্বাভাবিক কারণেই মুখ্যমন্ত্রী তথা নবান্নের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বোসের। পাশাপাশি, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে অনুমোদন না দেওয়া নিয়েও নবান্নের সঙ্গে সঙ্ঘাত হয়েছে রাজভবনের।

সম্প্রতি আবার এসআইআর প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে রাজ্যপাল বিবৃতি দিলে তাঁর বিরুদ্ধে খড়হস্ত হন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ অভিযোগ করেন, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের রাজভবনে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি, অস্ত্রশস্ত্রও মজুত রাখছেন রাজ্যপাল। বিষয়টি নিয়ে রাজভবন কল্যাণের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মানহানির মামলা করলে পাল্টা তৃণমূল সাংসদ হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমতাবস্থায় রাজ্যের শাসক বা বিরোধী কোনও পক্ষের সঙ্গেই রাজভবনের সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়, এমনটাই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।

যে কারণে রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজভবনে বোসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন করা হলেও, দেখা মেলেনি শাসক-বিরোধী কোনও প্রতিনিধির। সন্ধ্যায় রাজভবনের এক অনুষ্ঠানে নাম না করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তাতেও শাসক-বিরোধী দু’পক্ষের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের ব্যবধান কমানো যাবে না বলেই মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Raj Bhavan Governor CV Ananda Bose
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy