Advertisement
০৭ মে ২০২৪
TMC Rajbhawan Gherao

দিল্লি থেকে রাজভবন চলো অভিযানের প্রস্তুতি শুরু তৃণমূলের, রাত থেকে ফোনে নির্দেশ বিভিন্ন জেলায়

কর্মসূচি সফল করতে মূলত দক্ষিণবঙ্গের শহর লাগোয়া জেলাগুলির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এক লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে ‘রাজভবন চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

TMC has started their preparation for the proposed Rajbhawan Chalo on Thursday.

(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়. সি ভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:০২
Share: Save:

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশ হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল দলের নেতা-কর্মীদের। অনেক রাতে পুলিশি হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে বৃহস্পতিবার এক লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে ‘রাজভবন চলো’ অভিযান করবে তৃণমূল।

মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে অভিষেক বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না-করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি আমরা নিয়ে এসেছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা নেননি। তাই সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’’

অভিষেকের ওই ঘোষণার পর রাত থেকেই শুরু হয় অভিযানের প্রস্তুতির পালা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল দেশের দুই বড় শহরে এর আগে কখনও সমাবেশ করেছে বলে দলের প্রবীণ নেতারা মনে করতে পারছেন না। কিন্তু কর্মসূচির ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সেই কর্মসূচি ‘সফল’ করতেই হবে। তাই রাজভবনে জনসমাগমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও জেলা নেতৃত্বকে। নির্দেশ পাওয়ামাত্রই জেলায় জেলায় কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলকাতা-সহ তৎসংলগ্ন জেলা হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতা-কর্মীদের রাজভবনে জমায়েত করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনই জানিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী তথা রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও দলের মহিলা সংগঠনের সদস্যদের বেশি সংখ্যায় উপস্থিত করাতে উদ্যোগী হয়েছেন।

বুধবার সকাল পর্যন্ত তৃণমূলের বহু নেতাই দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরতে পারেননি। তাই রাত জেগে ফোনেই জমায়েত নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। হাওড়া সদর জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণেন্দু ঘোষ বুধবার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত থেকেই আমার জেলার প্রত্যেকটি ব্লক, ওয়ার্ড ও অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। কথা হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে হাওড়া সদর জেলা যে পরিমাণ লোক নিয়ে আসে, আমরা চেষ্টা করছি সেই পরিমাণ লোক যাতে রাজভবনের সামনে হাজির করানো যায়।’’ বুধবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। রাজভবন ঘেরাও কর্মসূচি সফল করতে তিনি কাঁথির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সুপ্রকাশ বলেন, ‘‘কাঁথি সাংগঠনিক জেলা থেকে আমরা রেকর্ডসংখ্যক লোক আনার চেষ্টা করছি। আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি কাঁথি ফিরে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করে আবারও বৃহস্পপতিবার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাজভবনে আসব।’’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি সফল করতে মূলত দক্ষিণবঙ্গের শহর লাগোয়া জেলাগুলির ওপরই জোর দিচ্ছে তৃণমূল। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘বুধবার কলকাতায় ফিরে আবার বৃহস্পতিবার কর্মসূচি করা একটু কষ্টসাধ্য ছিল। তাই দিল্লি থেকেই সব আয়োজন শুরু করে দিতে হয়েছে। কলকাতা ও তার কাছের জেলাগুলির নেতা-কর্মীদেরই মূলত এই সমাবেশে জমায়েত করতে বলা হয়েছে। তবে অন্য কোনও জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে চান দল তাঁদেরও স্বাগত জানাবে।’’ উল্লেখ্য, ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই সেই সমস্ত জেলাকে এই কর্মসূচি থেকে বাদ রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE