Advertisement
E-Paper

প্যান্ডেল ভ্রমণ দিয়ে জনসংযোগ শুরু করলেন অভিষেক, পুজো মিটতে বিজয়া সম্মিলনীর প্রস্তুতি শুরু করে দিল ভোটমুখী তৃণমূল

গত বার আরজি কর আন্দোলনের পরে বিজয়া সম্মিলনীকে ‘অস্ত্র’ করেই জড়তা কাটিয়ে মাঠে নেমেছিল তৃণমূল। এ বার তেমন কোনও নাগরিক আন্দোলন নেই বটে। তবে তৃণমূলের অনেকের মতে, মানুষের মনে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:০১
TMC is starting block level vijaya Sammilani from next Sunday

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

দুর্গাপুজোয় তিনি প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরছেন, ফুচকা খাচ্ছেন, এমনটা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। এ বার পুজোয় পর পর দু’দিন ‌অষ্টমী এবং নবমীতে তা-ই করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিল তাঁর কন্যা আজানিয়াও। ভোটের প্রাক্ বছরের পুজোয় অভিষেকের এ হেন প্যান্ডেল ভ্রমণকে অনেকেই ‘জনসংযোগের মঞ্চ’ হিসাবে বর্ণনা করছেন। আবার পুজো মিটতে না মিটতে সেই অভিষেকের নির্দেশেই পশ্চিমবঙ্গের ব্লকে ব্লকে বিজয়া সম্মিলনীর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। রবিবার (৫ অক্টোবর) থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিজয়া সম্মিলনী। ঘটনাচক্রে, ওই দিনই রেড রোডে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে পুজো কার্নিভাল। যেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সাধারণত দুর্গাপুজোর সময়ে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের দলীয় কর্মসূচি রাখে না। তবে প্রতিটি দলই তাদের মতো করে পুজোকে জনসংযোগের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করে। কিন্তু অভিষেককে এর আগে কখনও পুজোর সময় প্রকাশ্যে পুজো পরিক্রমায় দেখা যায়নি। কিন্তু এ বার মহালয়ার পর থেকেই অভিষেকের প্যান্ডেল ভ্রমণের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল তৃণমূলের অন্দরে। অষ্টমী-নবমীতে ‘অন্য’ অভিষেককে দেখা গেল দমদম, বাগুইআটি, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি মণ্ডপে।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, অভিষেক যে পুজোগুলিতে গিয়েছিলেন, তার কোনওটির থিম ছিল ভিন্‌রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, কোনওটিতে স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিদের অবদান ইত্যাদি। যা তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রচারের অভিমুখের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। একটি মণ্ডপে বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হাতে উৎসবের উপহারও তুলে দেন অভিষেক। যার প্রতিটিরই মর্মে রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজয়া সম্মিলনীকেও ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে তৃণমূল। এক প্রবী‌ণ নেতা একবার ঘনিষ্ঠমহলের আলোচনায় বলেছিলেন, ‘‘পুজোর সময়ে অনেক উল্টোপাল্টা খাওয়াদাওয়া হয়। মেদ জমে। বিজয়া সম্মিলনী হল আমাদের কাছে সেই মেদ ঝরানোর কর্মসূচি।’’ গত বার আরজি কর আন্দোলনের পরে বিজয়া সম্মিলনীকে ‘অস্ত্র’ করেই জড়তা কাটিয়ে মাঠে নেমেছিল তৃণমূল। এ বার তেমন কোনও নাগরিক আন্দোলন নেই বটে। তবে তৃণমূলের অনেকের মতে, মানুষের মনে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রয়েছে। আগামী বছর তৃণমূলকে সেই দেড় দশকের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা কাঁধে নিয়েই ভোটের ময়দানে নামতে হবে। এই প্রশ্নে ভিন্ন মতও রয়েছে। অনেকের বক্তব্য, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রয়েছে কেবল শহুরে মধ্যবিত্তদের মধ্যেই। সার্বিক ভোটারসংখ্যার নিরিখে যে অংশ ‘সংখ্যালঘু’। তবে ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভা নির্বাচনে একাধিক শহরাঞ্চলে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল। এগিয়ে ছিল বিজেপি। বিধানসভা ভোটের আগে সেই ক্ষতেও প্রলেপ দিতে চায় তৃণমূল।

বিজয়া সম্মিলনীর জন্য জনাপঞ্চাশ নেতার তালিকা করেছে অভিষেকের দফতর। সেই তালিকায় থাকছেন সাংসদ, বিধায়ক, ছাত্র-যুব নেতারা। তাঁরাই কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ বিজয়া সম্মিলনীতে যাবেন, ভাষণ দেবেন। মূলত ভোটের সুর বাঁধবেন। যার অন্যতম বিষয় হতে চলেছে রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) শুরু হলে বুথস্তরে কী ভাবে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের পরিষেবামূলক কর্মসূচিকেও তুলে ধরা হবে বিজয়া সম্মিলনীতে।

Abhishek Banerjee bijoya sammilani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy