Advertisement
E-Paper

ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিধানসভার বেতনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নজর ইডির, দুর্নীতির লেনদেনের অনুমান তদন্তকারীদের

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই সময় প্রায় ১৩ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ১৪:০০
Tmc MLA Jibankrishna Saha\\\\\\\\\\\\\\\'s assembly salary bank account is in ED tracking

সোমবার মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ফের গ্রেফতার করে ইডি। ছবি: পিটিআই।

ফের গ্রেফতার হয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এ বার তিনি গ্রেফতার হয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর আর্থিক গতিবিধির উপর নজরদারি চালিয়ে এই গ্রেফতারি হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। ইডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ বার তদন্তের আওতায় আসতে চলেছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বিধানসভার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই সময় প্রায় ১৩ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে। তখন সিবিআই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি ‘সিজ়’ করে। ফলস্বরূপ, বিধায়ক হিসাবে বেতন-সহ বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগদানের ভাতা তাঁর ওই অ্যাকাউন্টে পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।

২০২৪ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর বিধায়ক হিসাবে কাজকর্ম শুরু করেন জীবনকৃষ্ণ। সেই সময় আবেদনের ভিত্তিতে বিধানসভায় তাঁর বেতনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি খুলে দেওয়া হয়। সেই থেকে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি কাজে লাগিয়ে একাধিক লেনদেন করেছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। গত কয়েক মাসের তদন্তে নেমে সে কথা জেনেছে ইডির আধিকারিকেরা। তাই এ বার বিধানসভার এই বেতনের অ্যাকাউন্টটি তাদের তদন্তের আওতায় আসতে চলেছে বলেই সূত্রের খবর। বিধানসভার সচিবালয়ের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হলে বিধানসভার তরফ থেকে সব বিধায়ককেই একটি করে বেতনের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। তিনি যত দিন বিধায়ক পদে থাকেন তত দিন ওই অ্যাকাউন্টে বিধায়কের বেতন-সহ বিভিন্ন ভাতা দেওয়া হয়। পরে বিধায়কের মেয়াদ ফুরোলে তাঁর পেনশন পাঠানো হয় ওই অ্যাকাউন্টেই।

এ ক্ষেত্রে ২০২১ সালে বড়ঞা থেকে প্রথম বার তৃণমূলের টিকিটের জয়ী হয়ে বিধায়ক হওয়ার পর বিধানসভার তরফে ওই অ্যাকাউন্টটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২৩ সালে প্রথম বার গ্রেফতার হওয়ার পর সিবিআইয়ের পদক্ষেপের কারণে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেতন দেওয়া স্থগিত করে দেন বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত বছর জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি খোলা নিয়ে বিধানসভায় একাধিক বার দরবার করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। অ্যাকাউন্ট ব্যবহারযোগ্য হওয়ার পর সেই লেনদেনের কাজকর্ম শুরু করেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই বিধায়ক। জীবনকৃষ্ণ গ্রেফতারের পর সব লেনদেন খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা। সেই পর্যায়ে এ বার বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়কের বেতনের অ্যাকাউন্টের লেনদেন প্রসঙ্গে তদন্ত করবে তারা।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ভাতা ও বেতন সমেত প্রত্যেক বিধায়ক মাসে এক লক্ষ একুশ হাজার টাকা করে পান। জীবনকৃষ্ণ বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি বিধানসভার উচ্চশিক্ষা বিষয়ক এবং সাবঅর্ডিনেট লেজিসলেটিভ কমিটির সদস্য। প্রায় ৬১ হাজার টাকার বেতনের সঙ্গে এই দু’টি কমিটির বৈঠকে নিয়মিত যোগদানের কারণে তাঁর প্রাপ্য অর্থ পৌঁছে যেত ১ লক্ষ ২১ হাজারে। জেলে থাকার সময় যেহেতু তিনি ওই কমিটির বৈঠকগুলিতে অংশ নেননি, তাই গত বছর অ্যাকাউন্ট খোলার পর তাঁর বকেয়া যাবতীয় বেতন ওই অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। যদিও বিধানসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত ইডির তরফে তাঁদের কাছে জীবনকৃষ্ণর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনও তথ্য চাওয়া হয়নি। তবে তাঁর বেতন অ্যাকাউন্টটি যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইডি ‘সিজ়’ করতে চলেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তিনি।

Jiban Krishna Saha TMC MLA Recruitment Scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy