পথদুর্ঘটনা কমাতে মনোচিকিৎসকদের দিয়ে বাসের চালকদের কাউন্সেলিং করাতে চান পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বুধবার বাস ধর্মঘট নিয়ে বেসরকারি বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে প্রস্তাবিত ধর্মঘট নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রাজ্যে পথদুর্ঘটনা কমাতে বিভিন্ন পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সূত্রেই আসে মনোচিকিৎসক দিয়ে বাসচালকদের কাউন্সেলিংয়ের প্রসঙ্গ।
এ ক্ষেত্রে তিনি বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলিকেই দায়িত্ব নিতে বলছেন। কারণ, সরকারি উদ্যোগে একসঙ্গে সব বাসচালকের মনোচিকিৎসা করাতে গেলে রাজ্যের পরিবহণ পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে পড়তে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে সংগঠনগুলিকেই এই ধরনের প্রয়াসে উদ্যোগী হতে বলছেন। কোনও বাস সংগঠন যদি বাসচালকদের নিয়ে এই ধরনের শিবিরের আয়োজন করতে চায়, তবে যাবতীয় সহযোগিতা করবে পরিবহণ দফতর। এমনই আশ্বাস দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পথদুর্ঘটনা কমাতে শুধুমাত্র পরিবহণ দফতর, বাসমালিকেরা কিংবা ট্রাফিক পুলিশ প্রশাসন উদ্যোগী হলে হবে না। আগে বাস চালকদের সচেতন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কাউন্সেলিং করালে তাঁরাও যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই উপকৃত হবেন পথচলতি মানুষ।’’
আরও পড়ুন:
৭ মে কলকাতার মহাজাতি সদনে অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সভা আয়োজিত হয়। সেখানেই সংগঠনের তরফে মনোচিকিৎসক দিয়ে বাসচালকদের মনোচিকিৎসা বা কাউন্সেলিং করার বিষয়টি উঠে এসেছিল। ওই সভায় পরিবহণমন্ত্রী ছাড়াও হাজির হয়েছিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহন এবং খড়্গপুর আইআইটির পথদুর্ঘটনা বিষয়ক গবেষক ভার্গব মৈত্র। বাসচালকদের কেন মনোচিকিৎসার প্রয়োজন, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের নেতা রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা একমত যে পথদুর্ঘটনা রুখতে বাসচালকদের কাউন্সেলিং প্রয়োজন। তবে সবার আগে জেলায় জেলায় পরিবহণ দফতরের আরটিও, এআরটিও ও ট্রাফিক পুলিশ বিভাগকে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে।’’
সিটি সাবআর্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, “আমরা পরিবহণমন্ত্রীর ইচ্ছাকে মান্যতা দিচ্ছি। আমরা বলেছি শহরাঞ্চলে এই ধরনের উদ্যোগ যেন প্রত্যেক ডিসি পর্যায়ে করা হয়। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে। কিন্তু আরও একটি বিষয় হল, বাস বসিয়ে রেখে কাউন্সেলিং হলে চালকেরা তাতে আগ্রহ দেখাবেন না। কারণ, তারা রোজের ভিত্তিতে রোজগার করেন। এক দিন বসে যাওয়ার অর্থ তাঁদের উপার্জন বন্ধ। তাই কাউন্সেলিংয়ের দিন রাজ্য সরকার বাসচালকদের ভাতা দিলে তাঁদের বিষয়টিতে আগ্রহ থাকবে।”