ডিম আগে, নাকি ভোট আগে!
রাজ্যে প্রতিদিন দেড় কোটি ডিমের ঘাটতি মেটাতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় খামার গড়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন। তাই খামার গড়তে জমি চিহ্নিত করার কাজ চলছে।’’
ডিম উৎপাদনের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও এর পিছনে আসলে ভোটের চমক দেখছেন বিরোধীরা। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘উদ্যোগ ভাল হলেও সরকারের এই কাজ দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত হবে না তো?’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে সব গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিজেদের দখলে রাখতে এটা কৌশল। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে ১৫৮টি কিসান মান্ডি গড়ে তোলা হলেও অধিকাংশই ঝাঁপবন্ধ। এই পরিস্থিতিতে মুরগির খামার গড়া গিমিক ছাড়া কিছু নয়।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এর ফল কী হবে, সেটা ভবিষ্যৎই বলবে। আসলে ভোটের মুখে টাকা ভাগাভাগি করে নিতেই এই কৌশল!’’
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় দু’কোটি ৬০ লক্ষ। কিন্তু এখানে উৎপাদন হয় মাত্র এক কোটি। বাকি ডিম আসে ভিন্ রাজ্য থেকে। এই ঘাটতি মেটাতেই ২৩টি জেলা পরিষদ, ৩৩৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় মুরগির খামার গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকবে প্রাণিসম্পদ বিকাশ ও পঞ্চায়েত দফতর।
মুরগির খামার গড়তে গত মার্চে জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। জেলা স্তরে জমি চিহ্নিতকরণ থেকে খামার তৈরি পর্যন্ত গোটা প্রকল্প রূপায়ণে জেলা পঞ্চায়েত স্তরে কমিটি তৈরি হয়েছে। খামার গড়তে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে দফতর। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা মুরগির ছানা থেকে খাবার, ওষুধ সবই সরবরাহ করব।’’
ডিমের খামার নিয়ে বিরোধীরা বাঁকা কথা বললেও মন্ত্রী স্বপনবাবুর দাবি, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ডিমের ঘাটতি পূরণ তো হবেই। সেই সঙ্গে হবে নতুন কর্মসংস্থানও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy