বাঙুরে তখন চলছে কোভিড চিকিৎসা পরিষেবার মহড়া। নিজস্ব চিত্র।
একজন করোনা রোগী হাসপাতালে এসে প্রথমে যেখানে যাবেন এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর যা যা চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, তার সবই চালু আছে এবং যথাযথ ভাবে কাজ করছে বলে জানাল এমআর বাঙুর হাসপাতাল। মঙ্গলবার দেশে কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত যে মক ড্রিল হল, তাতে রাজ্যের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে যোগ দিয়েছিল বাঙুর হাসপাতালও। হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা মুক্তি সাধন মাইতি সব কিছু ঘুরে দেখে জানালেন, ‘‘ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড, রোগীর রোগ পরীক্ষার জায়গা, মজুত ওষুধ, চিকিৎসার জন্য সরঞ্জাম, আধুনিক যন্ত্র সবই ঠিক আছে। বস্তুত এই সমস্ত পরিষেবা কখনও বন্ধই হয়নি হাসপাতালে।’’
আবার অতিমারি এলে কি রোগীদের পর্যাপ্ত পরিষেবা দিতে পারবে রাজ্য? এই প্রশ্ন আর আগাম প্রস্তুতির সাবধানবাণী মাথায় রেখেই শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে কোভিড চিকিৎসার মহড়া। মঙ্গলবার সেই মহড়ার প্রথম দিনেই রাজ্যের ৪৪টি সরকারি হাসপাতাল ঝালিয়ে নিল তাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা। কলকাতার ৫টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার এম আর বাঙুর ছাড়াও রাজ্যের ৩৮টি হাসপাতাল স্বাস্থ্য ভবনের দেওয়া চেকলিস্ট মিলিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার কাজ সম্পূর্ণ করল। তবে এখনও বেশ কিছু হাসপাতালে এই মহড়া হওয়া বাকি আছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বাকি সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে ২৯টিতে এই মহড়া হবে বুধবার। বৃহস্পতিবার আরও ১৯টি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খতিয়ে দেখা হবে করোনা চিকিৎসার পরিষেবা।
কেন্দ্রের তরফেই এই কোভিড চিকিৎসা পরিষেবার মহড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত মহড়ার জন্য। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক চিকিৎসকও। রাজ্যের তরফে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন আইএমএ-র পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনু সেনও।
কথা ছিল, কোভিড মোকাবিলার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা, চিকিৎসক, নার্স-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা, অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা, করোনা পরীক্ষার পরিস্থিতি, অক্সিজেন এবং টেলিমেডিসিন পরিষেবার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। সরকারি হাসপাতালের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শয্যাসংখ্যা, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ, অক্সিজেন প্লান্ট, কত জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন, তার বিশদ তথ্য সন্ধ্যার মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। এ ছাড়া ওষুধ, পিপিই কিট, পাল্স অক্সিমিটার, ডায়ালিসিস চিকিৎসার পরিস্থিতিও জানাতে বলা হয়েছিল। সেই মতো তালিকা মিলিয়ে সমস্ত পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য স্বাস্থ্য ভবনকে দেওয়ার কথা হাসপাতালগুলির। মঙ্গলবার কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, আরজিকর, মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম এবং বিসি রায় হাসপাতালে কোভিড পরিষেবার মহড়া হয়। এ ছাড়া আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, বসিরহাট, বীরভূম, বিষ্ণুপুর, কোচবিহার, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, হুগলি, হাওড়া, জলপাইগুড়ি, ঝাড়গ্রাম, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, দুই মেদিনীপুরেরর সরকারি হাসপাতালগুলিতেও কোভিড পরিষেবা সংক্রান্ত মহড়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy