Advertisement
E-Paper

টালা থানার তৎকালীন ওসিকে কেন গ্রেফতার? আদালতে সাতটি কারণ ব্যাখ্যা করল সিবিআই

তথ্যপ্রমাণ লোপাট, দেরিতে এফআইআর দায়ের এবং ঘটনাস্থল বিকৃত করা— এমন নানা অভিযোগ উঠেছিল টালা থানার প্রাক্তন ওসির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তদন্তে গাফিলতি করেছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০১
Why was the former OC of Tala police station arrested, CBI told the reason in the court

টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। রবিবার আদালতে সিবিআইয়ের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। সে সময়ই বিচারকের সামনে গ্রেফতারির সপক্ষে সাত দফা কারণ ব্যাখ্যা করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

তথ্যপ্রমাণ লোপাট, দেরিতে এফআইআর দায়ের এবং ঘটনাস্থল বিকৃত করা— এমন নানা অভিযোগ উঠেছিল অভিজিতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তদন্তে গাফিলতি করেছিলেন তিনি। সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে বেশ কয়েক বার জেরা করে সিবিআই। শনিবারও সিজিও গিয়েছিলেন অভিজিৎ। প্রায় সাত ঘণ্টা জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করে তদন্তকারীরা। শুধু একা অভিজিৎ নয়, একই অভিযোগে শনিবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও গ্রেফতার করে সিবিআই। দু’জনকেই শনিবার আদালতে হাজির করানো হয়।

শুনানিতে অভিজিতের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘কর্তব্যে গাফিলতির কথা বলা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিভাগীয় তদন্ত করা যেত। কিন্তু ওসি-কে নিয়ে সিবিআইয়ের কিছু বলার নেই।’’ তবে অভিজিতের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সিবিআই আদালতে সাত দফা কারণ ব্যাখ্যা করল। সিবিআই আদালতে জানায়, আরজি কর-কাণ্ডে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ হয়েছে বলে মনে হয়। কারণ হিসাবে ঘটনার দিন দেহ উদ্ধারের পর সন্দীপ এবং অভিজিতের ফোনে কথা বলার বিষয়টি তুলে ধরেন তদন্তকারীরা।

আদালতে সিবিআই জানায়, গত ৯ অগস্ট সকাল ১০টা ০৩ মিনিট নাগাদ সন্দীপের থেকে খবর পান টালা থানার তৎকালীন ওসি। খবর পাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন তিনি। এমন জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন কেন? প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। তারা মনে করিয়ে দেয়, অভিজিৎ নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। একই সঙ্গে আদালতে তদন্তকারী সংস্থা এ-ও জানায়, দ্রুত ঘটনাস্থল ঘেরার কাজ করতে ব্যর্থ হন ওসি।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

মৃত্যুর শংসাপত্র দেরি করে দেওয়া হয়েছিল বলেও আদালতে জানায় সিবিআই। সেই কারণে সুরতহাল করতে দেরি হয়। সিবিআই জানায়, ৯ অগস্ট দুপুর ২টো ৫৫ মিনিটে হাসপাতালের সুপার অভিযোগ জানান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃতার পরিবার অভিযোগ করে। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার অনেক পরে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। আরও অভিযোগ, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা আইন অনুয়ায়ী ঘটনাস্থলের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়নি। সিবিআই এই অভিযোগের কথা উল্লেখ করে আদালতে বলেছে, ‘‘অভিযুক্তকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্য এমন করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’

মৃত চিকিৎসকের পরিবার প্রথম থেকেই দাবি করছে, খুব তাড়াতাড়ি তাদের মেয়ের দেহ দাহ করিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশই উদ্যোগী হয়ে সেই কাজ করে। এমনকি, দাহের জন্য টাকাও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের তরফে। কেন এত তাড়াহুড়ো, উঠেছিল প্রশ্ন। সেই বিষয়টিই শনিবার আদালতের সামনে রেখে সিবিআই জানায়, নির্যাতিতার পরিবার দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত চেয়েছিল। কিন্তু দ্রুত দেহ দাহ করে দেওয়া হয়।

থানায় জেনারেল ডায়েরিতে লেখা হয়েছিল, হাসপাতালের চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুমে নির্যাতিতাকে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতা মৃত জানার পরেও কেন অচৈতন্য অবস্থার কথা লেখা হল, প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে কোনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে অনুমান সিবিআইয়ের।

R G kar Incident CBI Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy