Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Wig

করোনায় সঙ্কটে পরচুল ব্যবসা

এগরা মহকুমার ভগবানপুর এবং তমলুক মহকুমার চণ্ডীপুর থেকে প্রতি বছর চিনের বাজারে পরচুল রফতনি করে কয়েকশো কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা আয় হয়।

ভগবানপুরের পরচুল তৈরির কারখানা এখন বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

ভগবানপুরের পরচুল তৈরির কারখানা এখন বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

গোপাল পাত্র
এগরা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:০০
Share: Save:

শুধু স্বাস্থ্য নয়, করোনাভাইরাসে সঙ্কটে রুটিরুজিও! পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ও চণ্ডীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলে পরচুলের ব্যবসা। দুই এলাকার ৯০ শতাংশের বেশি লোক এই কাজে যুক্ত। সংখ্যাটা প্রায় এক লক্ষ। স্থানীয় কারিগরদের তৈরি পরচুলের একটা বড় অংশই রফতানি করা হয় চিনে। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে আপাতত চিনে সেই রফতানি বন্ধ। আর তাতেই ঘনিয়েছে সঙ্কট।

দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, অরুণাচলপ্রদেশ, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে হকার মারফত কাঁচামাল (গোছাচুল) ভগবানপুর ও চণ্ডীপুরের পরচুল কারবারিদের কাছে আসে। প্রচুর টাকা ঋণ নিয়ে মহাজনের থেকে আগাম কাঁচামাল তুলে রাখা হয় লাভের আশায়। চিনের বাজারে পরচুলের কদর বেশি। সে দেশের ব্যবসায়ীরা সরাসরি ভগবানপুর-চণ্ডীপুরে চলে আসেন প্রতি বছর। তাঁরা সরাসরি পরচুল কেনায় এখানকার কারিগরদেরও লাভ হয় বেশি।

আরও পড়ুন: এই প্রথম নয়, নতুন নতুন রূপে ফিরে আসে আতঙ্কের করোনাভাইরাস

স্থানীয় সূত্রে খবর, চিনা ব্যবসায়ীদের ৫-৬ জনের দল বছরভর ভগবানপুর এবং চণ্ডীপুরে যাতায়াত করতেন। এলাকাতেই বা দিঘায় ৩-৪ মাস বাড়ি ভাড়া নিয়ে থেকে ব্যবসা করে ফিরে যান তাঁরা। চিনা নববর্ষের জন্য গত ডিসেম্বরে সেই চিনা ব্যবসায়ীরা দেশে ফিরে যান। জানুয়ারির শেষে ফের তাঁদের ভগবানপুরে আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের হানায় আর তাঁরা আসেননি। ফলে, ভগবানপুর এবং চণ্ডীপুরের পরচুলা কারবারিরা আপাতত কর্মহীন।

স্থানীয় পরচুলা কারবারি শেখ মেহবুল্লা বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের জন্য চিনের বাজারে পরচুল রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় কারবার লোকসানে চলছে। চিনা ব্যবসায়ীরা এ দেশে আসছেন না। ফলে, আমাদেরও কাজ বন্ধ। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সে দিকেই আমরা তাকিয়ে।’’ পরচুল শ্রমিক শেখ মইদুল এবং ফিরোজ আলিও বলছেন, ‘‘প্রতিদিন কাজ করলে ৬০০-৭০০ টাকা মজুরি মিলত। প্রায় দু’মাস কোনও কাজ নেই। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে রুজির টানে গ্রাম ছাড়তে হবে।’’

এগরা মহকুমার ভগবানপুর এবং তমলুক মহকুমার চণ্ডীপুর থেকে প্রতি বছর চিনের বাজারে পরচুল রফতনি করে কয়েকশো কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা আয় হয়। পরচুলা কারবারিরা জানালেন, প্রতি মাসে ভগবানপুর ও চণ্ডীপুর থেকে চিনে অন্তত ৫০ কোটি টাকার পরচুল রফতানি হয়। বছরে সেই অঙ্কটা প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। গত দু’মাস সেই রফতানি বন্ধ থাকায় ঘা খেয়েছে এলাকার অর্থনীতি। জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত খবর আমার কাছে নেই। তবে এর সঙ্গে অনেকের রুটিরুজির প্রশ্ন জড়িত। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

সহ-প্রতিবেদন: আনন্দ মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wig Coronavirus China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE