Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গুন্ডামি চলবে না, হুঁশিয়ারি মমতার

রেষারেষি করে রবিবারই দু’দল রামনবমী পালন করেছে। প্রশাসনের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করেই অস্ত্র নিয়ে আস্ফালন হয়েছে রাস্তায়। তার ২৪ ঘণ্টা পরে অস্ত্র মিছিলের জন্য নাম না-করে বিজেপি-কে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৬
Share: Save:

রেষারেষি করে রবিবারই দু’দল রামনবমী পালন করেছে। প্রশাসনের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করেই অস্ত্র নিয়ে আস্ফালন হয়েছে রাস্তায়। তার ২৪ ঘণ্টা পরে অস্ত্র মিছিলের জন্য নাম না-করে বিজেপি-কে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে পুলিশের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।

বিষ্ণুপুরে সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাম কোথায় বলেছিলেন, তাঁর নাম করে তলোয়ার বা পিস্তল নিয়ে মিছিল করতে হবে? কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি রামের নাম করে পিস্তল-তলোয়ার নিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের পাড়ায় ঢুকে হামলা করার! আমাদের রাজ্যে ধর্মের নাম করে গুন্ডামির সংস্কৃতি নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও হুঁশিয়ারি, ‘‘কাল থেকে সব বিষয় লক্ষ করছি। পুলিশকে বলছি, কঠোর ব্যবস্থা নিতে। যদি কোনও পুলিশ অফিসার এই বিষয়ে কোনও দুর্বল মনোভাব দেখান, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’

ওই বৈঠকেই রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘আমরা সব শনাক্ত করেছি। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আইনত ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ বৈঠকের মাঝপথেই উপস্থিত পুলিশ-কর্তাদের নিজেদের এলাকায় নজরদারির জন্য চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: রাম-মিছিলের জের, ৪৮ ঘন্টায় হত ৩

মিছিল হয়ে যাওয়ার পরে পুলিশও সক্রিয় হয়েছে। খড়গপুরে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ অস্ত্র আইনে মামলা করেছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। বীরভূমে এফআইআর হয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নামে। দিলীপবাবু অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘গণ্ডগোল পাকিয়ে এখন বিজেপির নাম দেওয়া হচ্ছে। আমি তলোয়ার নিয়েছি। শোভাযাত্রায় অনেক আগে থেকেই প্রতীক হিসেবে এই রকম অস্ত্র থাকে। বোমা, বন্দুক তো তৃণমূলের হাতিয়ার!’’ লকেটেরও মন্তব্য, ‘‘আমি ত্রিশূল নিয়েছিলাম। ত্রিশূল নারীশক্তির প্রতীক। আর মিছিল তো হয়েছে পুলিশের সামনে! তখন কেন ধরেনি?’’ মামলায় তাঁরা ডরাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সাপ হয়ে কামড়াব, তার পরে ওঝা হয়ে ঝাড়ব— এই হচ্ছে তৃণমূলের নীতি! বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওঁরাই তো রামনবমীতে নামলেন। দু’দলই বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছে। আর এত অস্ত্র এল কোথা থেকে? পুলিশ কী করছিল? এখন পুলিশের উপরেও হামলা হচ্ছে।’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, কাঁকিনাড়ায় তৃণমূল বিধায়কের মিছিলেও যে অস্ত্র ছিল, সেই ব্যাপারে প্রশাসনের কী মনোভাব? রাজ্য জু়ড়ে উত্তেজনা সামাল দিতে কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি সর্বদল বৈঠকের দাবি জানিয়েছেন সূর্যবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE