নাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল দল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে ভোটাভুটিতে গিয়ে নির্দল হিসেবে জয়ী প্রার্থীকে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পদে নির্বাচিত করলেন তৃণমূল সদস্যদের একাংশ। তাঁদের সমর্থন করলেন বিজেপি সদস্যও। বৃহস্পতিবার বিকেলে মেমারির নিমো ২ পঞ্চায়েতে এই ঘটনার পরে আবারও প্রশ্ন উঠেছে দলের সদস্যদের উপরে তৃণমূল নেতৃত্বের কর্তৃত্ব নিয়ে।
এর আগে মেমারির সাতগেছিয়া ২ পঞ্চায়েতে প্রথমে ভোটাভুটি, পরে টসের মাধ্যমে উপপ্রধান বেছে নেন তৃণমূলের সদস্যেরা। এ ছাড়াও পূর্বস্থলীর মেরতলা, কালনার কৃষ্ণদেবপুরে টসের মাধ্যমে প্রধান বাছাই হয়েছে। একের পর এক পঞ্চায়েতে নির্দেশ না মানার ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘পূর্ব বর্ধমানে ২১৫টি পঞ্চায়েতের মাত্র ২১টিতে বোর্ড গঠন হচ্ছে। তাতেই এই পরিস্থিতি। বাকি বোর্ড গঠনের সময় কী হবে, আশঙ্কা থাকছেই।’’
মেমারি ১ ব্লকের নিমো ২ পঞ্চায়েতের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৬টিতে জিতেছে তৃণমূল। বাকি তিনটির মধ্যে দু’টিতে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ক্ষোভে নির্দল হিসেবে প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া মহেশডাঙা ক্যাম্প থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী।
মেমারির পঞ্চায়েতগুলিতে প্রধান ও উপপ্রধান ঠিক করে দেওয়ার জন্য দলের এই বিধানসভার পর্যবেক্ষক স্বপন বিষয়ী, বিধায়ক নার্গিস বেগম ও ব্লক সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্যকে নিয়ে কমিটি গড়ে দেওয়া হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই কমিটি নিমো ২ পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে সুমিতা মাঝি ও উপপ্রধান হিসেবে সুশীল বরণের নাম ঠিক করেন। এ দিন পদাধিকারী নির্বাচনের সময় বন্ধ ঘরে প্রধানের নাম সমর্থন করেন তৃণমূলের সব সদস্যই। কিন্তু উপপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁদের একাংশ বেঁকে বসেন। তাঁরা জাহিদ শেখের নাম প্রস্তাব করেন। ভোটাভুটিতে ১০-৯ ফলে জিতে যান জাহিদ।
পঞ্চায়েত ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে ব্লক সভাপতি মধুসূদনবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি ও নির্দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দিল কয়েকজন। দলে রিপোর্ট করেছি। নির্দলের প্রস্তাবক ও সমর্থক কাদের অনুগামী, তা রিপোর্টে উল্লেখ করেছি।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন জানানো সদস্যেরা দলের প্রাক্তন বিধায়ক আব্দুল হাসেম মণ্ডল ও যুব সভাপতি নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। যদিও ওই নেতাদের বক্তব্য, ‘‘আমরা ওখানে ছিলাম না। বন্ধ ঘরে কী হয়েছে জানা নেই।’’