বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সাম্প্রতিক পরামর্শে অসন্তুষ্ট ঢাকা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি, রাজনাথের ওই মন্তব্য শিষ্টাচার এবং কূটনৈতিক সৌজন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে সম্মানজনক নয়।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে দেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও দ্বন্দ্ব চায় না ভারত। বস্তুত, গত বছর বাংলাদেশ শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এক কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে নয়াদিল্লির। ওই সাক্ষাৎকারে রাজনাথ জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও টানাপড়েন চায় না ভারত। তবে একই সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকেও নিজের কথাবার্তার সময়ে ‘সতর্ক’ থাকা পরামর্শ দেন তিনি।
ইউনূসের উদ্দেশে রাজনাথের ওই পরামর্শেই অসন্তোষ ঢাকার। বাংলাদেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদসংস্থা ‘বাসস’কে শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এসএম মাহবুবুল আলম জানান, ইউনূস প্রসঙ্গে রাজনাথের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘অযথার্থ’। এই মন্তব্য ‘শিষ্টাচার এবং কূটনৈতিক সৌজন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে সম্মানজনক নয়’ বলে দাবি করছে ঢাকা।
‘বাসস’কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় আলম বলেন, “ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি রাজনাথ সিংহের মন্তব্য সঠিক এবং গঠনমূলক নয়। তা শিষ্টাচার এবং কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতি সম্মানজনকও নয়। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যগুলো গঠনমূলক এবং শ্রদ্ধাশীল আলোচনার মাধ্যমেই সবচেয়ে ভাল ভাবে সমাধান করা সম্ভব।”
আরও পড়ুন:
বস্তুত, সাম্প্রতিক অতীতে ইউনূসের বেশ কিছু মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বাংলাদেশে চিনা বিনিয়োগ টানতে গিয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের প্রসঙ্গ টেনেছেন ইউনূস। আবার কখনও নেপালের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় উত্তরপূর্ব ভারতের প্রসঙ্গ টেনেছেন তিনি। অতি সম্প্রতি পাকিস্তানের এক সেনাকর্তাকে উপহার হিসাবে একটি বই দেন ইউনূস। ওই বইয়ের প্রচ্ছদে বাংলাদেশের মানচিত্রের আদলে নকশা ঘিরেও বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এই পরিস্থিতিতে রাজনাথের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।