বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার আলোচনা চলছে। ওই দেশের উপরে ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক হার কমাতে বেশি দামে হলেও কিছু পণ্য আমেরিকা থেকে আমদানির কথা ভাবছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। রবিবার এই সংক্রান্ত একটি সমঝোতায় দুই দেশ সই করবে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের সূত্র উল্লেখ করে সে দেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, আমেরিকা থেকে গম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা। এত দিন আমেরিকা থেকে সাহায্য হিসাবে এই পণ্য বাংলাদেশে আসত। কিন্তু, এ বার সরকারি ভাবেও গম আমদানি করা হবে। তার জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হবে ঢাকাকে।
আমেরিকা থেকে গম আমদানির জন্য রবিবার সমঝোতায় সই করবেন বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা। আমেরিকার কৃষি দফতরের তরফে সমঝোতায় থাকছেন মার্কিন গম অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা। প্রাথমিক ভাবে আমেরিকা থেকে তিন লক্ষ টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউনূস সরকার। তবে আপাতত ২ লক্ষ ২০ টন গমের সমঝোতা হচ্ছে। ১ লক্ষ ১০ টন করে দু’দফায় আমেরিকা থেকে গম আসবে বাংলাদেশে। এর জন্য প্রতি টনে তাদের ১৭০০ থেকে ২০০০ টাকা বেশি খরচ হবে। মার্কিন সংস্থাগুলির সঙ্গে বাংলাদেশ যে আলোচনা চালাচ্ছে, তার মূল উদ্দেশ্য বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং ঘাটতি কমানো। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে উদ্ধৃত করে এ কথা জানিয়েছে ‘প্রথম আলো’। আগামী মঙ্গলবার আরও একটি বৈঠকের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সাধারণ ভাবে আমেরিকায় বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ১৫ শতাংশ। ট্রাম্পের ঘোষিত বাড়তি ৩৫ শতাংশ কার্যকর হলে ১ অগস্ট থেকে মোট ৫০ শতাংশ শুল্কে আমেরিকায় পণ্য পাঠাতে হবে বাংলাদেশকে। গত ৮ জুলাই এই মর্মে ট্রাম্প একটি চিঠিও দিয়েছেন ইউনূসকে। কিন্তু বাংলাদেশ আরও আলোচনা চায়। তাদের বাণিজ্য দফতরের একটি দল অগস্টের আগেই আমেরিকা যেতে প্রস্তুত। এখনও মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারিখ পাওয়া যায়নি।
আমেরিকায় দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর একাধিক দেশের উপরে বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। ভারতের উপর চাপানো হয়েছে ২৭ শতাংশ শুল্ক। তবে এখনও তা কার্যকর করা হয়নি। বাণিজ্য নিয়ে ভারতের সঙ্গেও আমেরিকার আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক জোট ব্রিক্স-এর অন্যতম সদস্য দেশ ভারত। এর মাঝে ট্রাম্প বার দুয়েক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্রিক্স-এর আমেরিকা বিরোধী নীতির সঙ্গে যে সমস্ত দেশ যুক্ত থাকবে, তাদের উপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। ১ অগস্টের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কোন দেশ কী সমঝোতায় পৌঁছোয়, সে দিকেই এখন নজর সকলের।